এতদিন বাঙালির দুর্নাম ছিল ব্যবসাবিমুখ জাতি বলে। তবে আশ্চর্যজনক ভাবে মমতার আমলে প্রায় ৩৬০ ডিগ্রি বদলে গেছে সেই ছবি। উন্নয়নের জোয়ারে পাল্টাচ্ছে বাঙালির ভাবমূর্তিও। ছোট ও মাঝারি শিল্পে রাজ্য এক নম্বর। ফলে বাংলায় সম্ভাবনা আছে দেখে, শিল্পোদ্যোগে এখন এগিয়ে আসছেন অনেক তরুণ বাঙালিও। শুক্রবার কলকাতায় এক অনুষ্ঠানে এ কথা জানিয়েছেন খোদ কলকাতার মেয়র তথা রাজ্যের পুর ও নগরোন্নয়নমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম।
গতকালই পার্ক সার্কাস ময়দানে শুরু হয়েছে ইন্ডাস্ট্রিয়াল ইন্ডিয়া ট্রেড ফেয়ার (আইআইটিএফ)। ওই মেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে গিয়েছিলেন ফিরহাদ। তিনি ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের বিদ্যুৎমন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়, পুরসভার মেয়র পারিষদ (উদ্যান) দেবাশিস কুমার, বেঙ্গল ন্যাশনাল চেম্বার অফ কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রেসিডেন্ট এবং ৩১তম ইন্ডাস্ট্রিয়াল ইন্ডিয়া ট্রেড ফেয়ারের চেয়ারম্যান সত্যম রায়চৌধুরী, বণিকসভার সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট শুভ্র চন্দ্র, ভাইস প্রেসিডেন্ট অর্পণ মিত্র প্রমুখ। মেলায় যোগ দিয়েছেন দেশ-বিদেশের প্রতিনিধিরা। চলবে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত।
অনুষ্ঠান মঞ্চ থেকে ফিরহাদ বলেন, ‘বলা হয় বাঙালিরা ব্যবসা করতে চান না। বরং তাঁরা চাকরি করতে পছন্দ করেন।’ তিনি জানান, তরুণ বয়সে তিনিও তাঁর পরিজনদের কাছ থেকে পরামর্শ পেয়েছিলেন ব্যবসা না করার। তবে এখন আর এই ভাবনাকে আঁকড়ে ধরে বসে নেই বাঙালি। তাঁর কথায়, ‘এখন এসব ধ্যানধারণা বদলাচ্ছে। অনেক তরুণ বাঙালি শিল্পস্থাপনে আসছেন। ছোট ও মাঝারি শিল্পে বাংলা এখন এক নম্বরে।’
সিপিএমকে কটাক্ষ করতেও ছাড়েননি তিনি। পূর্বতন বামফ্রন্ট সরকারের সমালোচনায় কলকাতার মেয়র বলেন, ‘অনেক শিল্পোদ্যোগী রাজ্য ছেড়ে চলে গেছেন। তবে সেই সময় পাল্টাচ্ছে। আরও সহজে যাতে এখানে ব্যবসা করা যায়, রাজ্য সে ব্যাপারে তৎপর।’ আবার মেয়র পারিষদ দেবাশিস কুমার বলেন, ‘এই ধরনের বাণিজ্য মেলায় ক্রেতা ও বিক্রেতা দু’জনেরই সুবিধে। বাণিজ্য বাড়ানো অনেক সহজ হয়। বিনিয়োগ আসারও একটা পরিবেশ তৈরি হয়।’
অন্যদিকে, মেলার সভাপতি সত্যম রায়চৌধুরী বলেন, “এবারের বাণিজ্য মেলায় বেশ কয়েকটি নতুন উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে ২২ ডিসেম্বর হবে শিক্ষা কনক্লেভ, ‘ভিশন ২০২০: ইন্ডাস্ট্রি, অ্যাকাডেমিয়া লিঙ্কেজেস’। উপস্থিত থাকবেন শিক্ষাবিদ ও শিল্প-বিশেষজ্ঞরা। আবার ২৪ তারিখে রয়েছে শিল্প কনক্লেভে ‘ভিশন ২০২০: রোডম্যাপ ফর ইন্ডাস্ট্রি’। এছাড়া পড়ুয়া, তরুণদের জন্য রয়েছে দুটি প্রতিযোগিতা।”