৬ মাসের রাজ্যপাল শাসনের মেয়াদ শেষ হতেই দীর্ঘ ২২ বছর পর আবারও জম্মু-কাশ্মীরে জারি হচ্ছে রাষ্ট্রপতি শাসন৷ বুধবারই এই সংক্রান্ত নির্দেশিকা জারি করল স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক৷ এবং ওদিন মধ্যরাত থেকেই কার্যকর হল কেন্দ্রের এই নির্দেশিকা৷
দীর্ঘ টানাপোড়েনের পর চলতি বছরের জুন মাসে জম্মু-কাশ্মীরে পিডিপির সঙ্গে জোট ভেঙে দিয়েছিল বিজেপি৷ সরকারের উপর থেকে সমর্থন তুলে নেয় বিজেপির ২৫ জন বিধায়ক৷ ফলে ৮৭ আসন বিশিষ্ট জম্মু-কাশ্মীর বিধানসভায় সংখ্যাগরিষ্ঠতা হারায় মেহবুবা মুফতির সরকার৷ মুখ্যমন্ত্রীর পদ থেকে ইস্তফা দেন মুফতি। বিধানসভা ভেঙে দেন রাজ্যপাল। এরপর কংগ্রেস, পিডিপি ও ন্যাশনাল কনফারেন্স মিলে উপত্যকায় সরকার গড়ার চেষ্টা করলেও, তা সফল হয়নি৷
অগত্যা পিডিপি-বিজেপি জোট ভাঙার পরই উপত্যকায় ছয় মাসের জন্য রাজ্যপাল শাসন আবশ্যিক হয়ে পড়ে। বুধবার, ১৯ ডিসেম্বরই সেই মেয়াদ পূর্ণ হয়েছে৷ ফলে, জম্মু-কাশ্মীরের উত্তপ্ত পরিস্থিতির দিকে নজর রেখে আবারও সেখানে রাষ্ট্রপতি শাসন জারির নির্দেশ দেওয়া হল। কয়েকদিন আগেই উপত্যকার সাম্প্রতিক পরিস্থিতি সংক্রান্ত একটি রিপোর্ট স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের কাছে পেশ করেছিলেন রাজ্যপাল সত্যপাল মালিক৷ সূত্রের খবর, রাষ্ট্রপতি শাসন জারি করার ক্ষেত্রে কার্যকরী ভূমিকা পালন করেছে সত্যপাল মালিকের সেই রিপোর্ট৷
উল্লেখ্য, শেষবার উপত্যকায় রাষ্ট্রপতি শাসন জারি হয়েছিল ১৯৯৬-তে৷ এরপর দীর্ঘ ২২ বছর পর সেই একই নির্দেশিকা দিল কেন্দ্র৷ বুধবার এই সংক্রান্ত বিষয়ে আলোচনার জন্য বৈঠকে বসেছিল কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা৷ সেখানেই এই রাষ্ট্রপতি শাসন জারির বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়৷ এরপর সেই সিদ্ধান্ত স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের মাধ্যমে জানিয়ে দেওয়া হয় সত্যপাল মালিককে৷
প্রসঙ্গত, ভারতীয় সংবিধানের ৩৫৬ নম্বর অনুচ্ছেদের আঁওতায় না পড়ার কারণে জম্মু-কাশ্মীরের রাজ্য সংবিধানের ৯২ নম্বর ধারা অনুসারে নেওয়া যাবতীয় সিদ্ধান্তেই রাষ্ট্রপতির অনুমোদন প্রয়োজন। এবং রাষ্ট্রপতি শাসন জারি করার ক্ষেত্রে প্রাথমিক শর্ত, প্রথমেই ছ’মাসের জন্য রাজ্যপাল শাসন জারি করতে হবে সেখানে। তার মেয়াদ শেষ হলেই জারি করা যাবে রাষ্ট্রপতি শাসন। এই ব্যাপারে সংবিধানের ৭৪ (১) অনুচ্ছেদ অনুসারে প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বাধীন কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার পরামর্শ মেনে অনুমোদন দেন রাষ্ট্রপতি।
আবার, সংবিধান অনুযায়ী রাষ্ট্রপতি শাসনের মেয়াদ তিন বছরের বেশি বলবৎ হতে পারে না। তবে এর ব্যতিক্রম ঘটাতে পারে নির্বাচন কমিশন। সে ক্ষেত্রে কমিশনকে জানাতে হবে যে, রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচন করার মতো পরিস্থিতি নেই।