পরীক্ষা হলে টোকাটুকি চলে আসছে সেই কবে থেকে। জামার ভাঁজে, প্যান্টের পকেটে, মোজার ভাঁজে লুকিয়ে রাখা হত টুকলির কাগজ। পরীক্ষকের চোখের আড়ালে সময় সুযোগ করে সেই কাগজ বার করে দেখে নেওয়া হত উত্তর। ধরা পরলে খাতা বাতিল হয়ে যেত। যদিও এইসব সাধারণত স্কুলের পরীক্ষাতেই সীমাবদ্ধ ছিল। কিন্তু এবার সরকারি চাকরির পরীক্ষাতে টুকলি করতে গিয়ে চাকরি পাওয়ার বদলে গ্রেফতার হতে হল ৬০ জন পরীক্ষার্থীকে!
রবিবার দক্ষিণ কলকাতার বিভিন্ন কেন্দ্রে চলছিল আইন বিভাগের গ্রুপ ডি-র পরীক্ষা। সেখানেই এমন ঘটনা ঘটেছে বলে অভিযোগ। তবে এখানে টোকাটুকি সেই প্রাচীন পদ্ধতিতে নয়, রীতিমত ডিজিটাল ভাবে চলছিল। পরীক্ষার্থীর কানে লাগানো ছোট্ট একটি ব্লু টুথ সেট। পকেটে ছোট্ট একটি মোবাইল। তার সেই ফোনেই কনফারেন্স কলের মাধ্যমে বাইরে থেকে ভেসে আসছিল উত্তর। বাইরে যারা কন্ট্রোল রুম অপারেট করছিল, তারা একেক জন, একসঙ্গে, অনেককে এক কলে উত্তর বলে দিচ্ছিল। সবই ছিল মাল্টিপল চয়েসের প্রশ্ন।
পুলিশের অনুমান, এর পিছনে রয়েছে বড় কোনও চক্র। ধৃতদের সবাই নদিয়া এবং মুর্শিদাবাদের বলে জানা গিয়েছে। তদন্তকারীদের মনে করছেন, ধৃতরা যেহেতু লাগোয়া দুই জেলার, তাই এই চক্রও হয়তো ওই জেলারই। ওই ফোনগুলি থেকে যে নম্বর মিলেছে তা ধরেই তদন্ত করছে পুলিশ। সোমবার ধৃতদের আলিপুর আদালতে তোলা হলে অতিরিক্ত ম্যাজিস্ট্রেট দু’জনকে সাত দিনের জেল হেফাজত দিলেও, বাকিদের জামিন মঞ্জুর করেছেন। ধৃতদের বিরুদ্ধে ৪২০, ৪১৭ ধারায় মামলা রুজু করেছে পুলিশ।