মণিপুরের সেরা মাছে বাঙালির পেট এবং মন খুশি হওয়া এখন শুধু সময়ের অপেক্ষা। হলদিয়ার জলাশয়ে বাঙালির রসনা তৃপ্তির জন্য বেড়ে উঠছে মণিপুরের শ্রেষ্ঠ মাছ পেংবা। এই মাছটি অনেকটা পুঁটি মাছের মত দেখতে। যদিও গায়ের আঁশ ইলিশ বা সিলভার কার্পের মতই।
আগস্ট মাসে পরীক্ষামূলক ভাবে ১ থেকে ২ গ্রাম ওজনের মাছের পোনা ফেলেছিল মৎস্য দফতর। সেই মাছ এখন বেড়ে প্রায় ১০০ গ্রাম। দফতর সূত্রে খবর মণিপুরে প্রাপ্ত মাছের মতই ওজন হবে মাছগুলির। উত্তর-পূর্বাঞ্চলের রাজ্যটির লেক, নদী থেকে ক্রমে হারিয়ে যাচ্ছে মাছটি। এই মাছ মিষ্টি জলের, তার স্বাদের গুণে কদর বাড়িয়েছে চিন, ইন্দোনেশিয়ায়। সেই মাছই বাঙালির পাতে আনার পরিকল্পনা করেছে মৎস্য দফতর।
মৎস্যমন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিনহার বক্তব্য, ‘আমাদের রাজ্যে মাছের চাহিদা প্রচুর। তা মেটাতেই নতুন প্রজাতির ও ভিন রাজ্যের মাছের পরীক্ষামূলক চাষ শুরু করেছি আমরা। তিনি জানিয়েছেন এমন মাছের বাণিজ্যিক উৎপাদন শুরু হলে জোগান বাড়াতে সরকারি হ্যাচারি তৈরি করা হবে। মৎস্য দফতরের অন্যতম উপ-অধিকর্তা (মিষ্টি জল) সৌরেন জানা বলেন, ‘সব ধরনের জলে সব মাছের সমান বৃদ্ধি হয় না। যেমন অক্সিজেন কম আছে, এমন জলে রুই-কাতলার বৃদ্ধি ও উৎপাদন ভালো নাও হতে পারে। কিন্তু সেই জলাশয়ে পাঙাসের মতো মাছের উৎপাদন ভালো হবে। তাই আমরা পরিচিত মাছের সঙ্গে অপরিচিত মাছের চাষ শুরু করেছি। সেই পরিকল্পনাতেই আছে পেংবা চাষ।’
সন্দেহ ছিল, বাংলার উষ্ণ পরিবেশ পেংবা সহ্য করতে পারবে কি না। ওড়িশায় কেন্দ্রীয় সরকারের মৎস্য গবেষণা কেন্দ্র সেন্ট্রাল ইনস্টিটিউট অফ ফ্রেশ ওয়াটার অ্যাকুয়াকালচার সেন্টারে পেংবার কৃত্রিম প্রজনন ঘটিয়ে চারাপোনা তৈরি করা হয়। সেখান থেকেই চারা আনা হয় এ রাজ্যে। সোমবার হলদিয়ায় পেংবা চাষের পুকুরগুলি পরিদর্শন করেন ব্লক মৎস্য সম্প্রসারণ আধিকারিক সুমন সাহু। জানা গেছে, মাছগুলি ভাল ভাবেই বড় হচ্ছে।তাই সব মিলিয়ে বাঙালির পাতে মাছের নয়া পদ যোগ হওয়া শুধু সময়ের অপেক্ষা।