মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বারবার বলেছেন, আমরা গরিব দল। লিখে, ছবি বিক্রি করে দল চালাই। বিজেপির বিরুদ্ধে কটাক্ষ করে অভিযোগ করেছেন, ওরা বড়লোকের পার্টি। টাকা দিয়ে ভোট ওরা কিনতেই পারে। মমতার কথা যে কতটা সত্যি জাতীয় নির্বাচন কমিশনের কাছে পেশ করা আয়কর রিটার্নের তথ্যেই সেটা স্পষ্ট হয়ে গেল।
স্বীকৃত সব রাজনৈতিক দলকেই জাতীয় নির্বাচন কমিশনরের কাছে প্রতি আর্থিক বছরের আয় ব্যয়ের হিসাব পেশ করতে হয়। ৩০ অক্টোবর সেই অডিট রিপোর্ট পেশ করার শেষ দিন ছিল। তার পর কমিশনের থেকে প্রতিটি রাজনৈতিক দলের আয় ও খরচের বহর জেনে সোমবার একটি রিপোর্ট প্রকাশ করেছে অ্যাসোসিয়েশন অব ডেমোক্র্যাটিক রিফর্ম নামে একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা।
সেখানেই দেখা যাচ্ছে তৃণমূলের আয় বিজেপির কাছে নস্যি। এমনকি ঢাল-তলোয়ারহীন সিপিএমের আয়ও তৃণমূলের থেকে দু-তিন গুণ নয় বিশ গুণ বেশী। হিসাব অনুযায়ী, ২০১৭-১৮ আর্থিক বছরে বাংলায় শাসক দলের আয় হয়েছে ৫ কোটি ১৬ টাকা। যা গত আর্থিক বছরের তুলনায় প্রায় ১ কোটি ২২ লক্ষ টাকা কম। কিন্তু বাংলা, ত্রিপুরাতে ক্ষমতা হারানোর পরেও ২০১৭-১৮ আর্থিক বছরে সিপিএমের আয় হয়েছে ১০৪ কোটি ৮৪ লক্ষ টাকা। যা আগের আর্থিক বছরের তুলনায় সাড়ে চার কোটি টাকা বেশি। অবশ্য বিজেপির আয় সবাইকে ছাপিয়ে গেছে। ২০১৭-১৮ আর্থিক বছরে বিজেপি-র আয় হয়েছে, ১০২৭ কোটি টাকা। যার সঙ্গে বাংলার শাসক দল তৃণমূলের আয়ের কোনও তুলনাই চলে না। পরিসংখ্যান থেকে এটাও স্পষ্ট বাংলায় বামেরা ক্ষমতায় না থাকলেও তাদের খরচ তৃণমূলের থেকেও বেশী। চলতি আর্থিক বছরে সিপিএম বিভিন্ন খাতে খরচ দেখিয়েছে ৮৩ কোটি ৪৮ লক্ষ টাকা।
প্রসঙ্গত, ৩০ অক্টোবর অডিট রিপোর্ট জমা দেওয়ার শেষ দিন থাকলেও সর্বভারতীয় কংগ্রেস এখনও তা পেশ করে উঠতে পারেনি। সময় পেরিয়ে যাওয়ার ৪৮ দিন পরেও না। অডিট রিপোর্ট পেশ করতে ২৪ দিন দেরি করেছে বিজেপি-ও। তবে ২৪ সেপ্টেম্বরই নির্বাচন কমিশনের কাছে নিজেদের অডিট রিপোর্ট পেশ করেছে তৃণমূল।