ক্ষমতায় এসে বাম আমলে মাওবাদী সংস্রবে থাকা জঙ্গলমহলকে উন্নয়ন এবং সাংস্কৃতিক আবহের মাধ্যমে সমাজের মূলস্রোতে ফিরিয়ে এনেছেন মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই আবহ বজায় রাখতেই তাঁর উদ্যোগেই শুরু হয় জঙ্গলমহল উৎসব। এই উৎসবে এলাকার বাসিন্দারা নিজস্ব সংস্কৃতির নাচ, গান, পরিবেশনের সুযোগ পান। আগামী বছর ১৩ জানুয়ারি থেকে ঝাড়গ্রামের কুমুদকুমারী ইন্সটিটিউশন মাঠে আয়োজিত হতে চলেছে। চলবে ২০ জানুয়ারি পর্যন্ত। উদ্বোধন করবেন মুখ্যমন্ত্রী।
আগেরবারে আদিবাসী এবং লোক সংস্কৃতির ৪৮০ টি দলকে ধামসা মাদল দেওয়া হয়েছিল এবারে দেওয়া হবে ৯৬০টি দলকে। সব মিলিয়ে প্রায় ১ কোটি টাকার বরাত দেওয়া হয়েছে বলে পশ্চিমাঞ্চল উন্নয়ন দফতর সূত্রে খবর। আগেরবারের তুলনায় এবার আরও বড় করে হতে চলেছে জঙ্গলমহল উৎসব।
জঙ্গলমহলে জনপ্রিয় ফুটবল খেলা জঙ্গলমহল কাপের সঙ্গে জঙ্গলমহল উৎসব একসাথে করা হলেও গতবছর থেকে আলাদা ভাবে হচ্ছে। এই উৎসবে মূলত স্থানীয় শিল্পীরাই অনুষ্ঠান করে থাকেন। চাং, রণপা, পাতা, নাটুয়া, সাড়পা, করম, বাহা ইত্যাদি বিভিন্ন ধরণের নৃত্য, ঝুমুর, ভাদু-টুসু ইত্যাদি গানে মুখরিত হয়ে ওঠে উৎসবের মঞ্চ। থাকে বিভিন্ন দোকান, হস্তশিল্পের সামগ্রীও।
জঙ্গলমহলের মানুষের কাছে সরকারি পরিষেবা পৌঁছনোর কাজে গতি আনতে এবার পশ্চিমাঞ্চল উন্নয়ন দপ্তরের সরকারি কার্যালয়ের নিজস্ব ভবন তৈরি হচ্ছে ঝাড়গ্রাম ও পুরুলিয়াতে। ঝাড়গ্রাম শহরে প্রায় ১ বিঘে জমির উপর ও পুরুলিয়াতে কৃষি ভবনের পাশের ৯ কাঠা জমির উপর নতুন ভবন হচ্ছে। এর জন্য প্রায় আড়াই কোটি টাকা করে বরাদ্দ হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। প্রায় চারতলার এই ভবনগুলিতে থাকবে কনফারেন্স হল, ইঞ্জিনিয়ার সেল, পরিদর্শন রুম, করণিক বিভাগ। এর ফলে কলকাতা নির্ভরতা কমবে, ওই এলাকার মানুষ সেই সব অফিসে গিয়ে বিভিন্ন দাবি, প্রয়োজন ও সমস্যার কথা জানাতে পারবেন।
ইতিমধ্যেই জঙ্গল মহল অনেক উন্নত হয়েছে মুখ্যমন্ত্রীর হাত ধরে। পরিস্থিতির অনেক উন্নতি হয়েছে গত দু-আড়াই বছরে৷ স্কুলের উন্নতির জন্য নিয়মিত টাকা আসছে৷ মিড-ডে মিল চলছে ভালভাবে৷ বাম আমলে রেশন দোকানে গিয়ে চাল, গম, চিনির বদলে মিলত স্রেফ দুর্নীতি। তবে ক্ষমতায় আসার পরই শক্ত হাতে রাজ্যের রেশনিং ব্যবস্থার হাল ধরেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই থেকেই রেশনে সরকারি বরাদ্দ মাথাপিছু মাসিক ৮ কিলো চাল এবং ৩ কিলো গম। ১০০ দিনের কাজে বহু মানুষের কর্মসংস্থানও হয়েছে। জঙ্গলমহলে অর্থনৈতিক ভাবে পিছিয়ে পড়া ও আদিবাসী ছাত্রছাত্রীদের জন্য একটি ইংরেজি ভাষা শিক্ষার কর্মসূচীরও উদ্বোধন করেছেন শিক্ষামন্ত্রী।
নৈরাজ্যের কালো মেঘ কেটে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর সহায়তায় প্রকৃত অর্থে ‘জঙ্গলমহল হাসছে’।