চার মাস ধরেই নিখোঁজ ছিলেন তিনি। সোশ্যাল মিডিয়ায় বন্দুক ও ছুরি হাতে ছবি দেখে ঠিক যে আশঙ্কাটি করেছিল তাঁর পরিবার, শেষমেশ সেটাই হল। এবার সিনেমার স্মৃতি ফিরল বাস্তবে। ২০১৪ সালে শাহিদ কপূর অভিনীত ‘হায়দার’ ছবির মতো বাস্তবেও শাকিব নামের সেই ছবির ছোট্ট ছেলেটি জঙ্গী হয়ে মারা গেল সেনার গুলিতে।
বহুদিন ধরেই শাকিবকে তন্ন তন্ন করে খুঁজছিলেন তাঁর পরিবারের লোকজন। তাতে সফল না হওয়ার পর পরিবারের সকলেই ধরেই নিয়েছিলেন যে ঘরের ছেলেটা জঙ্গী দলেই নাম লিখিয়েছে। অবশেষে জম্মু কাশ্মীরের বান্দিপোরা জেলার হাজিনের বাসিন্দা ১৫ বছরের সাকিব বিলালের খোঁজ যখন মিলল, তখন সে আর জীবিত নয়। ফিরে এল তাঁর মৃতদেহ। জানা গেছে, শ্রীনগরের মুজগুন্ডে ভারতীয় সেনাবাহিনীর এনকাউন্টারে মৃত্যু হয়েছে ওই খুদে জঙ্গীর। সাকিবের সঙ্গে তাঁর এক বন্ধুরও খোঁজ মিলছিল না বিগত কয়েক মাস ধরে। সেই মুদাসির পারেবিরও মৃত্যু হয়েছে সেনাবাহিনীর গুলিতেই।
পরিবার সূত্রে খবর, ছোটবেলা থেকেই অভিনয়ের প্রতি তীব্র ঝোঁক সাকিবের। তাই স্থানীয় নাট্যদলে নামও লিখিয়েছিলেন সাকিব। ক্লাস সিক্সে পড়ার সময়েই বিশাল ভরদ্বাজ পরিচালিত এবং শাহিদ কপূর অভিনীত ‘হায়দার’ ছবিতে অভিনয় করতে দেখা গিয়েছিল তাঁকে। তবে ফুটবল খেলাতেও সমান আগ্রহ ছিল তাঁর। সাকিব আর মুদাসির দু’জনেই হাজিনের ইদগাঁয়ে ফুটবল টুর্নামেন্ট খেলতেন।
চলতি বছরেই নিখোঁজ হয় এই দুই কিশোর। কিছু দিন আগেই সোশ্যাল মিডিয়ায় খুব ভাইরাল হয় একটি ছবি। সে ছবিতেই একহাতে বন্দুক ও অন্যহাতে ছুরি নিয়ে দেখা গিয়েছিল সাকিব এবং তার বন্ধু মুদাসিরকে। সন্দেহ আগেই ছিলই। তবে ছবি দেখার পরই সাকিব এবং মুদাসিরের পরিবার নিশ্চিত হন লস্কর-ই-তৈবাতেই নাম লিখিয়েছেন দুজন। এরপরই নিরপত্তা বাহিনী গোপন সূত্রে খবর পেয়ে সাকিব ও তাঁর বন্ধুকে ধরতে অভিযান চালায়। সেখানেই গুলি বিনিময়ে মারা যান তাঁরা।
যদিও এই ঘটনায় ওই দুই কিশোরের পরিবারের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠছেই। তবে তা মানতে নারাজ শাকিবের পরিবার। তাঁদের দাবি জঙ্গীরাই মগজধোলাই করেছে শাকিবের। তাঁর বাবা বিলাল শেখ আহমেদের কথায়, ‘ইঞ্জিনিয়ার হতে চেয়েছিল শাকিব। অভিনয় আর ফুটবল খেলাটাও চালিয়ে যেত পাশাপাশি। জানিনা হঠাৎ কবে ও কীভাবে জঙ্গীদের সঙ্গে যোগ দিল সে।’