পাঁচ রাজ্যের ভোটে বিজেপির ভরাডুবির পর আগামী ১৯ জানুয়ারি তৃণমূলের ব্রিগেড সমাবেশের গুরুত্ব বেড়ে গেল কয়েক গুণ। বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আমন্ত্রণে প্রায় ২৫ টি দলের শীর্ষনেতা ওই সমাবেশে যোগ দিতে চলেছেন। বলা যেতে পারে লোকসভা ভোটের আগে ব্রিগেড সমাবেশই বিরোধী জোটের সবচেয়ে বড় সমাবেশ হতে যাচ্ছে। এই ব্রিগেডের সভা থেকেই কার্যত শুরু হয়ে যাবে বিরোধীদের প্রচার পর্ব।
পাঁচ রাজ্যে ফল প্রকাশের পর দিল্লীতে ভোটের হাওয়া উঠে গিয়েছে। শুরু হয়ে গিয়েছে জোট তৎপরতা। কেন্দ্রে পালাবদলের গন্ধ পেয়ে উল্লসিত বিরোধী শিবির। বিজেপিকে আর কোনও সুযোগ দিতে রাজি নয় তারা। মমতা তাই এখন থেকেই বিজেপি বিরোধী কর্মসূচী আরও বাড়িয়ে তোলার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। তাই এখন মমতার ‘পাখির চোখ’ ১৯ জানুয়ারির ব্রিগেড সমাবেশ। শুধু মঞ্চে তারকাদের ভিড় নয়, সমাবেশকে সুবিশাল রূপ দিয়েই তিনি ‘দিল্লী চলো’র গর্জন তুলবেন বলে জানা গেছে। রাজ্য জুড়ে তাই ব্রিগেড সমাবেশের প্রস্তুতিতে জোর দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।
মমতার সবচেয়ে বড় প্লাস পয়েন্ট, আঞ্চলিক দলের নেতৃত্বের সঙ্গে এই মুহূর্তে তাঁর খুব ভালো সম্পর্ক। মধ্যপ্রদেশে যাতে এসপি, বিএসপি কংগ্রেসকেই সমর্থন দেয় সে ব্যাপারে তৃণমূল নেত্রী ছিলেন সক্রিয়। জোট বৈঠকেও মমতা বুঝিয়ে দেন, বিরোধী ঐক্যে যেন ফাটল না হয়। বিজেপিকে সর্বত্র ক্ষমতার বাইরে রাখতে একজোট হতে হবে। তাই মমতা সবচেয়ে বেশী জোর দিতে চাইছেন বিরোধী ঐক্যে। এক আসনে এক প্রার্থীর সঙ্গে বলে দিয়েছেন, যে যেখানে শক্তিশালী সে সেখানে লড়বে। তাঁর এই ফর্মুলা মেনেই রাজস্থান, মধ্যপ্রদেশ ও ছত্তিশগড়ে জিতেছে কংগ্রেস। এই জয়কে তাই মমতা ‘আমাদের সবার জয়’ বলেছেন, তা অত্যন্ত ইতিবাচক বলেই মনে করছে সবাই। বস্তুত, ‘আমি নই আমরা’ স্লোগান খুব ভেবেচিন্তেই তিনি রেখেছেন বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা। কারণ, ওয়াকিবহাল মহলের মতে, কারও একার দ্বারা বিজেপিকে ক্ষমতাচ্যুত করা সম্ভব নয়। চাই জোট। তাই ‘আমাদের জয়’ বলে কংগ্রেসকেও তিনি বার্তা দিয়েছেন, এই জয়ে তাদের যেন মাথা ঘুরে না যায়। সবাই মিলেই ভোটে জোট করে এগোতে হবে। আঞ্চলিক দলের জোট ছাড়া বিজেপির এই হারের পরেও কেন্দ্রে পরিবর্তন আনা সম্ভব নয়।
অস্বীকার করার উপায় নেই, বর্তমান প্রেক্ষাপটে বাংলার মুখ্যমন্ত্রী কার্যত জাতীয় নেত্রীর ভূমিকায়। ব্রিগেড সমাবেশ থেকেই সেটা আরও স্পষ্ট হয়ে যাবে।