গেরুয়া শিবিরের নেতারা বরাবরই অসমীচীন ভাষায় আক্রমণ করে এসেছেন বিরোধীদের। বর্বরতার নগ্ন রূপ বারবারই ফুটে উঠেছে তাঁদের ভাষণে। তবে এবার বিজেপির সর্বভারতীয় সম্পাদক কৈলাস বিজয়বর্গীয়কে সতর্ক করল কলকাতা হাইকোর্ট। তাঁকে তৃণমূল সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় সম্পর্কে কোনও রকম বিরূপ ও কুরুচিকর মন্তব্য করা থেকে বিরত থাকতে নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি সৌমেন সেন।
উল্লেখ্য, বিজেপির এই গালিগালাজের রাজনীতি নতুন নয়। গোটা দেশের বিরোধীরাই বারবার এর বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন। বাংলার মাটিতে দাঁড়িয়ে একাধিকবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও সর্বভারতীয় তৃণমূল যুব কংগ্রেস সভাপতি অভিষেকের উদ্দেশ্যে নানা কুরুচিকর মন্তব্য করেছেন বিজেপির নেতা-নেত্রীরা। কৈলাসও দলের সেই ধারাই বজায় রেখেছিলেন। তবে এবার তাঁর ফলস্বরূপ জুটল আদালতের এমন হুঁশিয়ারি।
প্রসঙ্গত, ২৮ নভেম্বর নদিয়ার শান্তিপুরের চৌধুরিপাড়ায় বিষমদ খেয়ে ১২ জনের মৃত্যু হয়। ওই ঘটনার পরে ৩০ নভেম্বর কৈলাসের নেতৃত্বে বিজেপির একটি প্রতিনিধি দল সেখানে যায়। অভিষেকের অভিযোগ, ঘটনাস্থলে গিয়ে কৈলাস দাবি করেছিলেন যে অভিষেক ওই বিষমদ থেকে দেদার টাকা আয় করছেন। তাঁর মদতে ওই ব্যবসা চলছে, তাই তিনিই এই মৃত্যুর জন্য দায়ী। যা স্বাভাবিকভাবেই মানহানির সামিল।
এরপরই ওই বক্তব্যের প্রতিবাদ জানিয়ে কৈলাসের কাছে নোটিস দিয়েছিলেন অভিষেকের আইনজীবী সঞ্জয় বসু। নোটিসে অবিলম্বে বক্তব্য প্রত্যাহার করে ক্ষমা চাইতে বলা হয়। কিন্তু কৈলাস নোটিসের উত্তর না দেওয়ায় হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন অভিষেক। ওই মামলার শুনানিতেই এবার বিচারপতি এমন নির্দেশ দিয়েছেন।
আদালতের এই রায়কে তৃণমূলের নৈতিক জয় হিসেবেই দেখছেন রাজনীতিবিদদের একাংশ। তাঁদের মতে, বিজেপি যে প্রায়সই অসমীচীন ভাষায় বিরূপ ও আপত্তিকর মন্তব্য করে থাকে, এবং এর জেরেই আদালতের সতর্কবার্তা পেয়েছেন কৈলাস, তা জনসমক্ষে আসার পর বিজেপির স্বরূপ বুঝতে আরও সুবিধা হবে সাধারণ মানুষের।