আসন্ন লোকসভা নির্বাচনে সাফল্য পেতে শেষ পর্যন্ত ‘ধর্ম’-কেই বাজি ধরছেন মোদী। এমনিতেই রামমন্দির প্রতিষ্ঠা নিয়ে বেজায় চাপে তারা। ইতিমধ্যেই মোদীর সাথে মতবিরোধ, রামমন্দির নিয়ে মাত্রাতিরিক্ত বাড়াবাড়ি এবং নোটবন্দী এবং দুর্নীতি প্রসঙ্গেও মোদী সরকারের মানসিকতার সঙ্গে তাল মেলাতে না পেরে ইতিমধ্যেই দল ছেড়েছেন রাষ্ট্রীয় লোক সমতা পার্টির (আরএলএসপি) সভাপতি এবং নরেন্দ্র মোদীর সরকারের মানব সম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রকের রাষ্ট্রমন্ত্রী উপেন্দ্র কুশওয়াহা, সাবিত্রী বাই ফুলে। রামদেবও আস্থা হারাচ্ছেন মোদীর ওপর থেকে। এমন এক টালমাটাল সময়ে ধর্ম নিয়ে ভোট বৈতরণী পার হতে চাওয়ার মারাত্মক অভিযোগে মোদীকে কার্যত কোণঠাসা করলেন ন্যাশনাল কনফারেন্সের সহ সভাপতি ওমর আবদুল্লা।
সোমবার দিল্লীতে দলীয় কার্যালয়ে মোদীকে রীতিমত চাপে ফেলে তিনি আবদুল্লা বলেন, ‘যে প্রতিশ্রুতি দিয়ে বিজেপি ক্ষমতায় এসেছিলেন তা রাখতে পারেনি তারা।’ সর্দার বল্লভভাইয়ের মূর্তি তৈরি করাকেও ভোটের আগে পায়ের নিচে নড়বড়ে জমি শক্ত করার কৌশল বলেই ব্যাখা করেছেন তিনি। এমনিতেই বহু টাকা ব্যয় করে বল্লভ ভাইয়ের মূর্তি নির্মাণ করা নিয়ে বিরোধী দলের কাছে বেজায় খোঁচা খাচ্ছেন মোদী। তার ওপর আব্দুল্লার এই সরাসরি বক্তব্যে হাল আরও বেহাল হয়েছে, সূত্রের খবর অনুযায়ী এমনটাই জানা গেছে।
ক্ষমতায় এলে রামমন্দির হবে; এমন জিগির তুলেই ক্ষমতায় আসা। কিন্তু অবস্থা এখন এমনই যে ‘রাম’-নাম শুনলেই নাভিশ্বাস উঠছে বিজেপির। হরধনু ভঙ্গের মতো রামমন্দির করাও যে খুব শক্ত কাজ, তা এখন হাড়ে হাড়ে টের পাচ্ছে মোদী অ্যান্ড কোম্পানী। মন্দির গড়ার দাবিতে ইতিমধ্যেই তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেছে শিবসেনা। আরএসএস এবং বিশ্ব হিন্দু পরিষদের মতো সংগঠনগুলিও চাপ সৃষ্টি করে চলেছে।
রাম মন্দির তৈরিতে ব্যর্থ হওয়ার কারণে শরিক শিবসেনা এবং বিশ্বহিন্দু পরিষদের কাছেও বারবার ভর্ৎসনা শুনতে হয়েছে মোদী সরকারকে। শিবসেনা তো রীতিমত হুঁশিয়ারি দিয়েছে ২০১৯-এর মধ্যে অযোধ্যায় রামমন্দির তৈরির কাজ শুরু না হলে দ্বিতীয়বারের জন্য আর ক্ষমতায় ফিরবেন না মোদী। কারণ অযোধ্যায় রামমন্দির তৈরির প্রতিশ্রুতি দিয়েই ক্ষমতায় এসেছিলেন তিনি। এরকম জটিল পরিস্থিতিতে যে কোন ভাবেই বল্লভ ভাইয়ের মূর্তি স্থাপন করা ছাড়া আর উপায় ছিল না মোদীর কাছে। তবে রাম মন্দিরের ব্যর্থতা যে ভোটের ফলাফলে প্রভাব ফেলতে চলেছে তা বেশ বুঝতে পারছেন মোদী তাই যে ধর্মীয় আবেগ দিয়ে ক্ষমতায় এসেছিলেন সেই আবেগ নিয়ে খেলাই এখন মসনদ বাঁচানোর শেষ তাস মোদীর।