তেলেঙ্গানা বিধানসভা যে ফের টিআরএসের দখলেই আসতে চলেছে সেই ছবি স্পষ্টই ছিল। বুথ ফেরত সমীক্ষাও এমন ইঙ্গিতই দিয়েছিল। সত্যি হল সেই কথাই। ১১৯টি আসনের মধ্যে ৮৬টি আসন পেয়ে জয়ী টিআরএস। কেসি রাওয়ের ওপরই ভরসা রাখল সেখানকার মানুষ৷ গজোয়েল কেন্দ্রে ৫০০০০ ভোটে জিতেছেন কে চন্দ্রশেখর রাও। তাই তিনিই ফিরছেন সরকারে। কংগ্রেস পেয়েছে ২২টি আসন। টিআরএস ঝড়ে কার্যত উড়ে গেছে বিজেপি।
গোটা তেলঙ্গানা ঘুরে দেখা গিয়েছিল, রাজ্যের একটা বড় অংশে উন্নয়ন দৃশ্যত রাস্তায় দাঁড়িয়ে। সেই উন্নয়নের সঙ্গেই কেসিআর সমানুপাতে মিশিয়ে দিয়েছিলেন জনকল্যাণ প্রকল্পের ‘জাদু’। সেই জাদুর ছোঁয়া পৌঁছে গিয়েছিল রাজ্যের প্রায় ঘরে ঘরে। রাস্তা, জল, বিদ্যুৎ, বাড়ি এ সব তো হয়েইছে। পাশাপাশি, মেয়ের বিয়েতে আর্থিক সহায়তা, কৃষিঋণ মকুব, চাষের জন্য জমি-মালিককে আর্থিক সহায়তা, গৃহহীন পরিবারকে দু’কামরার বাড়ি, সরকারি কর্মচারীদের বেতন বৃদ্ধি— জনগণ যে খুশি, তা তাঁরা বুঝিয়ে দিলেন ইভিএমের বোতামে৷ ঘরে ঘরে কেসিআর সরকার তার নানাবিধ প্রকল্প নিয়ে পৌঁছে গিয়েছিল, আজ তারই ফসল ঘরে তুলছে কেসিআর।
২০১৪ সালের নির্বাচনে তেলেঙ্গানা বিধানসভার ১১৯টি আসনের মধ্যে মাত্র ৫টি আসনে জিতেছিল বিজেপি। এই আসনগুলিও হায়দরাবাদের। এবারও সেই সংখ্যা খুব বেশি হেরফের হওয়ার সম্ভাবনা কম। ফলে বিজেপি নয় তেলেঙ্গানায় মূল লড়াই আসলে টিআরএস এবং কংগ্রেসের নেতৃত্বাধীন জোটের মধ্যেই ছিল।
অবিভক্ত অন্ধ্রপ্রদেশ ও নবগঠিত তেলেঙ্গানায় বিজেপির উপস্থিতি তেমন উল্লেখযোগ্য নয়। ফলে বিজেপির মূল লক্ষ্য ছিল, কংগ্রেস-টিডিপি-সিপিআই-তেলেঙ্গানা জনসমিতির মহাজোটকে আটকানো এবং ভাঙন ধরানো টিআরএস-বিরোধী ভোটের ঐক্যেও। সেই লক্ষ্যে হিসেব কষেই সাম্প্রদায়িক ভোটের প্রচারে উস্কানিমূলক ভাষণ দিয়েছিলেন বিজেপি নেতারা। তবে এতকিছুর পরেও দেখা গেল, তেলেঙ্গানায় বিজেপির ‘ভাঁড়ে মা ভবানি’। ১১৯ টির মধ্যে মাত্র ২টিআসন পেয়েছে তারা।