আদালতের রায়ে ৯ জানুয়ারি পর্যন্ত স্থগিত বিজেপির রথযাত্রা। কিন্তু এমন সাময়িক মুখরক্ষা করার থেকে রাজ্য যদি প্রস্তাবিত রথযাত্রাকে ‘শহিদ’ করে দিত, তাতে দলের ভাবমূর্তি যেমন উজ্জ্বল হতো, তেমনই উজ্জীবিত হতেন রাজ্য বিজেপির দলের কর্মী-সমর্থকরা। তাহলে আদালতে কেন পা রাখা হল ? কে বা কারা মামলা করার সিদ্ধান্ত নিলেন?
এখন এই সব প্রশ্ন ঘিরেই উত্তাল রাজ্য বিজেপির অন্দরমহল। মাথাচাড়া দিয়েছে গোষ্ঠী-বিভাজনও। এটা দলগত সিদ্ধান্ত নয়। কোন কোন নেতা এই সিদ্ধান্ত নিলেন? জানা গেছে, জয়প্রকাশ মজুমদারই মূলত মামলার বিষয়টি সামলাচ্ছিলেন। মামলা ঘিরে টানটান উত্তেজনায় দু’দিন কেটে যাওয়ার পরে জয়প্রকাশ মজুমদারের ভূমিকা নিয়েই বড়সড় প্রশ্ন উঠে গিয়েছে বিজেপির অন্দরে। এই সিদ্ধান্ত নিতে দলের কে তাঁকে মদত দিয়েছেন, তার খৌঁজ চলছে। রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ এই মামলা নিয়ে বেজায় অসন্তুষ্ট বলে বিজেপি সূত্রের খবর।
বিজেপির একটি অংশ জানাচ্ছে, দিলীপ ঘোষের সঙ্গে কোনও আলোচনা না করেই মামলা করে দিয়েছিলেন জয়প্রকাশ মজুমদার। রাজ্য বিজেপির অন্যতম সাধারণ সম্পাদক প্রতাপ বন্দ্যোপাধ্যায়ও এই মামলার প্রক্রিয়ার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। কিন্তু দিলীপ ঘোষের অনুমতি না নিয়েই যে মামলার পথে এগনো হচ্ছে, তা প্রতাপবাবুও জানতেন না বলে রাজ্য বিজেপির আর এক সাধারণ সম্পাদকের দাবি।
দিলীপ অনুগামীদের বক্তব্য, অমিত শাহের অনুপস্থিতিতে শুক্রবার রথযাত্রা চালু করার উদ্যোগ নেওয়াই উচিত ছিল।এতে হয়ত যাত্রা নির্বিঘ্ন নাও হতে পারত। তেমন হলে দলের কৌশল কি হবে, সেটাও মোটামুটি স্থির ছিল। কিন্তু আদালতের চক্করে ফেঁসে সে সবই জলে গিয়েছে। রাজ্য সভাপতিকে অন্ধকারে রেখেই এত বড় সিদ্ধান্ত নেওয়া ঠিক হয়নি বলে ফুঁসছে দলের একাংশ। কেন কারও সঙ্গে কোনও আলোচনা না করেই মামলা করেছিলেন জয়প্রকাশ মজুমদার, সেই কৈফিয়ত চাওয়ার দাবিও উঠেছে।
এদিকে, গোটা রথযাত্রা কর্মসূচিরই নাকি বিরোধী ছিলেন বিজয়বর্গীয়-মুকুল রায়েরা। দলগত বিন্যাসে নাকি জয়প্রকাশ, প্রতাপ এখন মুকুল রায়ের সঙ্গে আছেন। মুকুল রায়ের একটা প্রবনতা আছে যখন-তখন মামলা করার। সেক্ষেত্রে গোপনে মামলা করার ছকটি মুকুল রায়ের কিনা, তাও খতিয়ে দেখারও দাবি উঠেছে বিজেপি অন্দরে।