বৃহস্পতিবার হাইকোর্টেই বসে গেছে বিজেপির রথের চাকা। আদালত সাফ জানিয়ে দিয়েছে এত কম সময়ের মধ্যে পর্যাপ্ত পুলিশের ব্যবস্থা করা সম্ভব নয়। ফলে এখন রথযাত্রা থেকে বিরতই থাকতে হবে গেরুয়া শিবিরকে। গতকালের এই নৈতিক পরাজয়ের পর, স্বাভাবিকভাবেই মুখ পুড়েছে দল-সহ দলীয় নেতৃত্বের। তাই আজ আর কোচবিহারে বিজেপির জনসভায় আসার ঝুঁকি নিচ্ছেন না বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহ। আসছেন না ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব দেবও।
তবে বিজেপির তরফ থেকে অজুহাত দেওয়া হচ্ছে দুপুর একটায় নয়াদিল্লিতে বিজেপি সদর দফতরে অমিত একটি সাংবাদিক বৈঠক করবেন বলেই আজ কোচবিহারে যেতে পারছেন বিজেপি সভাপতি। কিন্তু আসল কারণটি কী তা বুঝতে বাকি নেই কারও। রাজনীতিবিদদের একাংশের মতে, দলের রথযাত্রা কর্মসূচী পিছিয়ে যাওয়া যে একপ্রকার দলের সভাপতিরই ব্যর্থতা। একইসঙ্গে মনোবল ভেঙেছে কর্মীদেরও। ফলে এরমধ্যে অমিত সভা করতে এলেও সেই সভা গুরুত্ব হারাবে। তাই আগেভাগেই তাঁর না আসার সিদ্ধান্ত।
উল্লেখ্য, বৃহস্পতিবার বিজেপির রথযাত্রা পিছিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দেয় কলকাতা হাইকোর্ট। বৃহস্পতিবার দিনভর শুনানির পর বিকেলে বিচারপতি তপোব্রত চক্রবর্তী জানিয়েছিলেন, এত কম সময়ের মধ্যে পর্যাপ্ত পুলিশের ব্যবস্থা করা সম্ভব নয় রাজ্যের। কোচবিহারে কোনও অপ্রীতিকর ঘটনা বা জীবনহানি ঘটলে তার দায় বিজেপির জেলা সভাপতি নেবেন কিনা, সেই প্রশ্নও তুলেছেন বিচারপতি।
বিচারপতি চক্রবর্তী এ দিন রাজ্যের সব জেলার পুলিশ সুপারকে নির্দেশ দিয়েছেন, তাঁদের জেলার রথযাত্রা নিয়ে বিজেপির সংশ্লিষ্ট সভাপতি বা সম্পাদকের সঙ্গে বৈঠক করতে। বৈঠকের পরে যা সিদ্ধান্ত হবে, তা সভাপতি বা সম্পাদককে জানিয়ে দিতে হবে। এর পাশাপাশি ২১ ডিসেম্বরের মধ্যে আদালতকে পূর্ণাঙ্গ রিপোর্ট পেশ করতে হবে। সেই রিপোর্টের ভিত্তিতে রাজ্য এবং বিজেপি তাদের বক্তব্য জানিয়ে হলফনামা পেশ করবে। পরবর্তী শুনানি হবে ৯ জানুয়ারি। ততোদিন পর্যন্ত রথযাত্রায় স্থগিতাদেশ বহাল থাকবে।
প্রসঙ্গত, আজ, শুক্রবার বেলা দশটায় কোচবিহার থেকেই বিজেপির রথযাত্রা কর্মসূচির উদ্বোধন হওয়ার কথা ছিল। হাইকোর্টের পর এবার অমিত শাহের এমন সিদ্ধান্তে প্রশ্ন উঠে গেল এই রথযাত্রার ভবিষ্যত নিয়েই। অন্যদিকে, কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের এই সিদ্ধান্তের পর মুখে কুলুপ এঁটেছেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। খোদ সারথিই যখন এমন হাল ছেড়ে দিয়েছেন, তখন গর্ত থেকে কীভাবে উঠে দাঁড়াবে তাঁদের রথ? পদ্মবনে এখন সিঁদূরে মেঘ দেখছেন বিজেপির কর্মীরাই।