রাজ্যকে সাজিয়ে তুলতে এবং পরিচ্ছন্ন রাখতে বরাবরই জোর দিয়েছেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। উন্নয়নের পাশাপাশি সৌন্দর্যায়নেও সমান গুরুত্ব দিয়েছেন তিনি। বিরোধী নেত্রী থাকাকালীন যে কথা বলতেন, ক্ষমতায় এসে তাই করে দেখিয়েছেন মমতা। তিলে তিলে অপরূপা বানিয়েছেন দীঘাকে। পূর্ব মেদিনীপুরের বাজকুলে সরকারি জনসভা থেকে মমতা বার্তা দিলেন, ‘আরও সাজবে দীঘা। একদিন গোয়াকেও ছাড়িয়েও যাবে দীঘা’।
পর্যটনের অনুকূল হিসাবে গড়ে তোলা হয়েছে দীঘাকে। সে কথা জানিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘এখানে সাত কিমি লম্বা মেরিন ড্রাইভ তৈরি হচ্ছে। ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সেন্টার, বিশ্ব বাংলা পার্ক হয়েছে। নতুন রাস্তা ও ব্রিজ হচ্ছে। আর দুটি ব্রিজ হয়ে গেলে মুম্বইয়ের মতো মেরিন ড্রাইভ তৈরি হয়ে যাবে। যা উপভোগ করতে পর্যটকে ভরে যাবে রূপসী দিঘা। যারাই এখন দিঘায় আসছে, তারা বলছে, কী ছিল, কী হয়ে গিয়েছে! নিজেরা গেলেও দেখতে পাবেন কী পরিবর্তন হয়েছে’।
স্বাভাবিকভাবেই এখন বছরভর পর্যটকদের ভীড় লেগে থাকে দীঘায়। পর্যটনের বিকাশ হওয়ায় বেকারত্বও দূর হয়েছে। সেই প্রসঙ্গ টেনে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আমি চাই আপনাদের বাড়ির ছেলেমেয়েরা এখানেই কাজ করবে। হলদিয়া ও দিঘাকে কেন্দ্র করে কত কাজের সুযোগ তৈরি হচ্ছে। আগামী দিনে কারও বাইরে যাওয়ার দরকার নেই। বাড়িতে থেকেই সকলে কাজ করতে পারবে’।
সরকারি জনসভা থেকে জেলা প্রশাসনের মস্তিষ্কপ্রসূত ‘পিঙ্ক ক্যাব’-এর সূচনা করে প্রকল্পের ভূয়সী প্রশংসা করেন মুখ্যমন্ত্রী। জানান, আগামী দিনে মহিলারা আরও এগিয়ে যাবে। পাশাপাশি মন্দারমণিতে হোম-স্টে প্রকল্পেরও সূচনা করেন মুখ্যমন্ত্রী। হোম-স্টে প্রকল্পের মধ্যমে পর্যটন আরও গতিশীল হবে জানিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘তমলুক রাজবাড়ি–সহ জেলার বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পর্যটন কেন্দ্রে আরও বেশি করে হোম টুরিজম তৈরি করতে হবে। আমরা মন্দারমণিতে বাড়িতে বাড়িতে হোম টুরিজম করছি। আমরা দেড় লক্ষ টাকা দিয়ে বাড়ি তৈরি করে দিচ্ছি। বাড়িতে সুন্দর টিভি লাগিয়ে দেওয়া হচ্ছে। সুন্দর করে বায়ো টয়লেট তৈরি করা হচ্ছে। ওখানে টুরিস্টরা থাকবে। আপনি ওই বাড়িতে থাকার ভাড়া ও খাবারের খরচ নেবেন। মহিষাদলে আমরা গান্ধীজির নামে বিশ্ববিদ্যালয় করেছি। তমলুকে মেডিক্যাল কলেজ করা হচ্ছে। হলদিয়ায় ২০ হাজার কোটি বিনিয়োগ হচ্ছে। আরও বিনিয়োগ আসছে। তাজপুর বন্দর অনুমোদন পেয়ে গিয়েছে। এইসব কাজ সম্পূর্ণ হলে আরও অনেক নতুন শিল্প তৈরি হবে। রাস্তাঘাট চওড়া হচ্ছে, নতুন ডিগ্রি কলেজ, আইটিআই কলেজ, সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতাল হয়েছে। ১,১০০ কোটি টাকার জলের প্রকল্প নেওয়া হয়েছে। ২,৩০০ কোটি টাকার পানীয় জলের প্রকল্প নেওয়া হচ্ছে। মা ও শিশুদের জন্য কাঁথিতে ১৩০ বেডের হাসপাতাল করা হচ্ছে’।