ক্ষমতার কী অসাধারণ মাহাত্ম্য। অবশ্য ক্ষমতা হারানাের শােকে বহু রাজা রাজরাই পাগল হয়ে ছেড়া জামাকাপড় পরে বা না পরে পথে পথে ঘুরেছেন। এই দৃশ্য খুব একটা বিরল নয়। বাংলাকে নিজেদের চৌদ্দপুরুষের সম্পত্তি ভেবে বসে থাকার পরে হাত থেকে সমস্ত ক্ষমতা চলে যাওয়ার পরে এ রাজ্যের সিপিএম নেতাদের মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে চলেছে। গৌতম দেব তাে আগে থেকেই ঘােষিত পাগল। তার পাগলামির কথা সর্বজনবিদিত। কিন্তু ২০১১ সালের পর থেকে যাবতীয় ক্ষমতা চলে যাওয়ার পর থেকে একে একে মানসিক বিকারগ্রস্ত হয়ে পড়েছেন সূর্যকান্ত মিশ্র, সুজন চক্রবর্তী, কান্তিরা। বাকি ছিলেন একটু শিক্ষিত বলে গর্ব করা মহম্মদ সেলিমের। কিন্তু বেচারা সেলিমও যে তার সতীর্থদের মানসিক ভারসাম্যহীনতার ছোঁয়াচে রােগে ভীষণভাবে আক্রান্ত হয়ে পড়েছেন, তার প্রমাণ দিতে এবার উঠে-পড়ে লেগেছেন। তাই কয়েকদিন আগেও যে বিজেপি ও আরএসএসের সঙ্গে হাত ধরাধরি করে গলায় গলা জড়িয়ে পঞ্চায়েত ভােটে লড়াই করলেন, সেই বিজেপি এবং আরএসএস নাকি আবিষ্কার করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে। এমন একটা প্রলাপ আলিমুদ্দিনের স্বীকৃত পাগলাগারদের নবতম সংযােজন মহম্মদ সেলিমের মস্তিষ্কপ্রসূত ছাড়া আর কী হবে? বুধবার হঠাৎ করেই আলিমুদ্দিনে কোনও ইস্যু ছাড়াই বসে পড়ে এই সমস্ত ভুলভাল প্রলাপ বকতে শুরু করলেন তিনি।
সেলিমের দাবি, ‘আরএসএসের সবথেকে বড় আবিষ্কার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। অন্তত সর্বজনস্বীকৃত মানসিক ভারসাম্যহীন হওয়ার পরে এটাই মহম্মদ সেলিমের প্রথম অবিষ্কার। রীতিমতাে আর্কিমিদিসের স্টাইলে তাই ‘ইউরেকা’ বলে প্রেস কনফারেন্সই ডেকে ফেললেন। অবশ্য কতদিনই বা আর মানসিক স্থিরতা বজায় রাখা সম্ভব? একটা তাে লিমিট থাকা উচিত। যেদিকেই তাকাচ্ছেন, সেদিকেই শুধু নেই আর নেই। রাজ্যের ক্ষমতা যাওয়ার পরে প্রথম বছর পাঁচেক তাও রাজ্যের প্রধান বিরােধী দলের স্বীকৃতিটা ছিল। পরে সেটাও চলে গেল কংগ্রেসের কাছে। এখন তাে আবার একবার কংগ্রেসের কোলে দোলেন, একবার বিজেপির কোলে দোলেন আলিমুদ্দিনের নেতারা। বিমান বসু বলেন কংগ্রেসের সঙ্গে লড়বেন তাে কংগ্রেস হাইকম্যান্ড বলে কে সিপিএম? আবার এতটাই মানসিক ভারসাম্য চলে গিয়েছে যে, গত সাড়ে সাত বছরে বুঝেই উঠতে পারলেন না কে শত্রু? মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় না বিজেপি? বিজেপি শত্রু হলে তাে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে জব্দ করা যাবে না। তাই কিছু একটা বলতে হয়, তা বলা। দুদিন আগেই বিজেপিকে সুবিধে পাইয়ে দিয়ে তাদের কাছে ঘেঁষার সুযােগ নিতে হাইকোর্টে মামলা করল সিপিএম ফিরহাদ হাকিমের মেয়র হওয়া আটকাতে। কিন্তু কলকাতা হাইকোর্টও কার্যত মুখে ঝামা ঘষে ফেরত পাঠিয়ে দিল। এ কুল ও কূল দুদিকই গেল। এর পরেও কী পাগল না হয়ে থাকা সম্ভব? সেলিমের কিন্তু সত্যিই কোনও দোষ নেই।
(সৌজন্য:- খবর ৩৬৫ দিন)