আসামের বিভিন্ন জায়গায় ইতিমধ্যেই শুরু হয়ে গেছে পঞ্চায়েত ভোট যদিও এখনও নাগরিক পঞ্জীতে নাম তোলার পক্রিয়া সম্পন্ন হয়নি৷ ফলে প্রতিটি এনআরসি সেবাকেন্দ্রেই রোজ মারাত্মক ভীড় হচ্ছে৷ সেখানেই নিজের স্ত্রীর নাম অন্তর্ভুক্ত করাতে এসে প্রাণ হারালেন এক বাঙালি৷
অত্যন্ত দুঃখজনক এই ঘটনাটি ঘটেছে আসামের বরাক উপত্যকার করিমগঞ্জ জেলার নয়াগ্রামে৷ মৃত ব্যক্তির নাম মহিবুর রহমান(৬৬)৷ স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে বরাকের ধলসাদার এনআরসি সেবাকেন্দ্রে স্ত্রীর নাম তুলতে এসেছিলেন তিনি, প্রচন্ড ভীড়ে অসুস্থ বোধ করার জন্য হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে সেখানেই তার মৃত্যু হয়৷ তাঁর বুকে পেসমেকার থাকলেও ভীড়ে তা কাজ করেনি৷
এখনও অবধি আসামে এনআরসি-র চূড়ান্ত খসড়া তালিকা থেকে প্রায় ৪০ লাখ ৭ হাজার ৭০৭ জনের নাম বাদ গেছে৷ এখন সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে চলছে নাম সংযোজন আর আপত্তি জানানোর পক্রিয়া৷ তাই নিজেদের নাগরিকত্বের প্রমাণ দিতে রোজই বাঙালি বাসিন্দারা ভিড় করছেন বিভিন্ন এনআরসি সেবাকেন্দ্রে৷ নাগরিকপঞ্জীতে নাম না উঠলে পরবর্তীকালের ভোগান্তির মধ্যে পড়তে চান না কেউই৷ কারণ নাগরিকত্ব হারালে আসাম থেকে যে বিতাড়ন নিশ্চিত তা এক প্রকার বুঝিয়ে দিয়েছে আসামের সরকার৷ যার তীব্র বিরোধিতা করেছেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা৷ এর জন্য তিনি বারংবার বিজেপি এবং কংগ্রেসকেই দায়ী করেছেন৷
ভীড়ের জন্য এবং ভোট শুরু হয়ে যাওয়াতে এনআরসিতে নাম সংযোজনে ব্যাঘাত ঘটছে এবং ভোগান্তি বাড়ছে মানুষের৷ তাই আসাম রাজ্য নাগরিক সুরক্ষা সমন্বয় সমিতি (সিআরপিসিসি) এই নাম তোলার মেয়াদ অন্তত আরো দু’মাস বাড়ানোর দাবি জানিয়েছে৷ সোমবারই তারা এই বিষয়ে লিখিত পত্রটি কাছাড়ের জেলাশাসকের হাতে তুলে দিয়েছে৷ তাঁদের এই দাবি যে কতটা যুক্তিসম্মত তা চোখে আঙুল দেখিয়ে দিল মহিবুরের এই মর্মান্তিক মৃত্যু৷ কিছুদিন আগেই এভাবে নাগরিকত্বের প্রমাণ দিতে এসে প্রাণ হারান সাহেরা বানু নামের এক মহিলা৷ এনআরসিকে কেন্দ্র করে মৃত্যুর সংখ্যা বেড়েই চলেছে রোজ৷ উল্লেখ্য, মৃত মহিবুরের নাম নাগরিকপঞ্জীতে উঠলেও তাঁর স্ত্রীর নাম ছিল না৷ আর সেই জন্যেই এনআরসি সেবাকেন্দ্রে এসেছিলেন তিনি৷




