ইস্টবেঙ্গলকে ইস্টবেঙ্গলেরই ঘরের মাঠে হারিয়ে দিয়ে গেল মিনার্ভা পঞ্জাব। এই আই লিগে কলকাতার দুই দলের যে আর কোনও আশা নেই তা ভালই বোঝা যাচ্ছে। আশা জাগিয়ে শুরু করেছিল ইস্টবেঙ্গল। সেখানে মোহনবাগান কিছুটা পিছিয়েই। দু’ম্যাচ পর থেকে চিত্রটা বদলাতে শুরু করে। জিততে শুরু করে মোহনবাগান। কিন্তু ঘরের মাঠে দু’দিন আগেই চেন্নাইয়ের কাছে আটকে যেতে হয়। ইস্টবেঙ্গলের অবস্থা আরও খারাপ। টানা তিন ম্যাচে হার। আগের ম্যাচে আইজলের কাছে ৩-২ গোলে হারতে হয়েছিল। আর মঙ্গলবার যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গনে ইস্টবেঙ্গল ০-১ গোলে হারল মিনার্ভা পঞ্জাবের সঙ্গে। সঙ্গে উঠে এল ছন্নছাড়া ফুটবল।
গ্যালারিতে ঝোলানো ব্যানারে লেখা, ‘ডু ইউ ফিল দ্য পেইন?’ ইস্টবেঙ্গল কোচের নজর সেদিকে গিয়েও লাভ নেই। কারণ, তিনি ইংরেজি বোঝেন না। পাশের ব্যানারে স্প্যানিশে লেখা, ‘জুন্টোস মাসিয়া লা গ্লোরিয়া’। অর্থাৎ, সাফল্যের দিকে একসঙ্গে এগোনো। এটা নিশ্চয়ই বুঝতে পেরেছেন আলেসান্দ্রো। কীসের যন্ত্রণা, সেটা এতদিনে কলকাতায় থেকে নিশ্চয়ই জেনে গেছেন। ঘরের মাঠে দ্বিতীয় ম্যাচ দেখতে এসেও যন্ত্রণাবিদ্ধ হয়ে বাড়ির পথ ধরলেন ইস্টবেঙ্গল সমর্থকেরা।
মিনার্ভা থিয়েটারে একেবারে চূড়ান্ত ‘ফ্লপ’ লাল–হলুদ শো। মিনার্ভার কাছে ০–১ হেরে হারের হ্যাটট্রিক লাল–হলুদের।
ইস্টবেঙ্গলের খেলায় আক্রমণের নামগন্ধ নেই। ঘরের মাঠে খেলা, ঝুঁকি নিয়ে কোথায় তিন স্ট্রাইকারে যাবে দল, আলেসান্দ্রোর অভিধানে তা নেই। ৭৭ মিনিটে গোল হজম করে ইস্টবেঙ্গল। যে দলের ডিফেন্সে বিশ্বকাপার ডিফেন্ডার বিপক্ষ ফুটবলারের সঙ্গে গতিতে না পেরে ফেলে দেন, সেই রক্ষণে ভরসা কতটা করা যাবে? গোল হজমের কিছুক্ষণ আগে ওপোকুর ঘাড় টেনে ধরেন অ্যাকস্টা। দু’জনে মিলেই পড়ে যান। বঁাদিক থেকে মইনুদ্দিনের ক্রস। বলটা ফলোই করেননি মনোজ। সেই ক্রস থেকে গোল করে ওপোকু, তখন হামাগুড়ি খাচ্ছেন মনোজ। গোল করেই দৌড়েছিলেন কর্নারের দিকে। মিনার্ভার উইলিয়াম ওপোকু সেখানে গিয়ে শুরু করলেন অভিনব নৃত্য। তাঁর দেশ ঘানায় যে নাচকে বলে, ‘আজ়োন্তো’।
ম্যাচের পরে সাংবাদিক সম্মেলনে এসে সেই আজ়োন্তোর মহিমা বোঝাচ্ছিলেন ওপোকু। বলছিলেন, ‘‘ঘানার আসামোয়া গিয়ান, সুলে মুন্তারিরা এই নাচ করেন ম্যাচ জিতলে। কলকাতায় এসে ইস্টবেঙ্গলকে হারানোর আনন্দে আমিও নাচলাম। জানতাম, ওঁদের রক্ষণের চেয়ে আমার গতি বেশি। বল পেলে গোল করবই।’’ সাত ম্যাচে মিনার্ভার পয়েন্ট এখন এগারো।