স্রেফ কুর্সিতে বসে থাকার পক্ষপাতী তিনি কোনও দিনই নন। রাজ্যের উন্নয়নের ধারাকে এগিয়ে নিয়ে যেতে সর্বদাই তৎপর তিনি। তাই ৫ জেলা সফর শেষ হতেই এবার দুই মেদিনীপুর সফরে যাচ্ছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আর এই চার দিন ব্যাপী দুই মেদিনীপুর সফর শুরুই হচ্ছে আজ পশ্চিম মেদিনীপুরে কেশিয়াড়ির প্রশাসনিক সভা দিয়ে। তবে এখানেই শেষ নয়। সভা থেকেই একগুচ্ছ প্রকল্পের উদ্বোধন এবং শিলান্যাসও করবেন মুখ্যমন্ত্রী। প্রশাসন সূত্রে খবর, সব মিলিয়ে ৪৯টি প্রকল্পের উদ্বোধন এবং ৫১টি প্রকল্পের শিলান্যাস করবেন তিনি।
জানা গেছে, উদ্বোধন হতে চলা ৪৮টি প্রকল্পে ব্যয় হয়েছে প্রায় ১৩৮ কোটি টাকা। আর শিলান্যাস হতে চলা ৫০টি প্রকল্পে বরাদ্দ হয়েছে প্রায় ৪৫৬ কোটি টাকা। প্রশাসন সূত্রে খবর, যে সব প্রকল্পের শিলান্যাস হতে চলেছে, তার প্রায় সব ক’টিরই প্রকল্প পিছু বরাদ্দ হয়েছে ৫০ লক্ষ কিংবা তার বেশি। আর যে সব প্রকল্পের উদ্বোধন হতে চলেছে, তার প্রায় সব ক’টি পিছু বরাদ্দ হয়েছে ২৫ লক্ষ কিংবা তার বেশি। সব মিলিয়ে কেশিয়াড়ির সভা থেকে প্রায় ৬৩৯ কোটি টাকার প্রকল্পের সূচনা করবেন মুখ্যমন্ত্রী।
প্রসঙ্গত, জেলার মধ্যে একমাত্র এই কেশিয়াড়ি পঞ্চায়েত সমিতিতেই একমাত্র দাঁত ফোটাতে পেরেছে সাম্প্রদায়িক বিজেপি। অবশ্য তা মানুষকে মিথ্যে প্রতিশ্রুতি দিয়েই। ব্লকের ৯টি গ্রাম পঞ্চায়েতের মধ্যে ৫টিতেই বোর্ড গড়েছে তারা। পাশাপাশি কেশিয়াড়ি পঞ্চায়েত সমিতিতেও সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়েছে গেরুয়া শিবির। বোর্ড গঠন অবশ্য হয়নি। প্রশাসনিক সভার জন্য এবার কেশিয়াড়িকেই বেছে নেওয়া তাই যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ।
সূত্র থেকে পাওয়া খবর, খোদ কেশিয়াড়ির জন্যই এবার চারটি প্রকল্পের উদ্বোধন করবেন মুখ্যমন্ত্রী। প্রায় সাড়ে ৪০ লক্ষ টাকা ব্যয়ে কেশিয়াড়ি হাইস্কুলের এসসি, এসটি হোস্টেল ভবন নির্মাণ, ২৮ লক্ষ টাকা ব্যয়ে কেশিয়াড়ি রবীন্দ্র ভবনে মার্কেট কমপ্লেক্স নির্মাণ, ২২ লক্ষ টাকা ব্যয়ে একটি ঢালাই রাস্তা নির্মাণ এবং ওই ব্লকেই কর্মতীর্থর কাছে ২০ লক্ষ টাকা ব্যয়ে অপর একটি ঢালাই রাস্তা নির্মাণ করা হয়েছে। চার চারটি প্রকল্পের পাশাপাশি ২ কোটি ৪৪ লক্ষ টাকা ব্যয়ে নেকড়েমারা মৌজায় সুবর্ণরেখা নদীর বাম পাড়ের ৮৭০ মিটার প্রশস্ত করার কাজেরও আজ শিলান্যাস হবে।
আজকের সভার পর, গতকাল, মঙ্গলবার মেদিনীপুরে প্রশাসনিক বৈঠক করবেন মুখ্যমন্ত্রী। বুধবার তাঁর পূর্ব মেদিনীপুরের বাজকুল কলেজ ময়দানে পরিষেবা প্রদান অনুষ্ঠান। আর বৃহস্পতিবার, সফরের শেষদিন দিঘায় প্রশাসনিক বৈঠক করবেন তিনি। মুখ্যমন্ত্রীর সফরকে ঘিরে ইতিমধ্যেই সাজ সাজ রব জেলা জুড়ে। প্রশাসনিক আধিকারিক ও দলীয় কর্মীদের পাশাপাশি, মেদিনীপুরবাসীর মধ্যেও এখন উন্মাদনা তুঙ্গে।