‘ব্রিগেড সমাবেশে যোগ দিতে আসছে ২০ টি দল। ১৮ টি রাজ্যও আমাদের সঙ্গে আছে। এ এক ঐতিহাসিক সমাবেশ। আগামী দিনে বড় ভূমিকা নেব আমরা’। পুরুলিয়ার বলরামপুর কলেজ ময়দানে তৃণমূলের বিশাল জনসভায় এ কথা বলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
মুখ্যমন্ত্রী জানান, ব্রিগেডের সভায় ১৮ থেকে ২০টি দল যোগ দিচ্ছে। আসছেন চন্দ্রবাবু, দেবগৌড়া, অরবিন্দ কেজরিওয়াল, কুমারস্বামী, শারদ পাওয়ার, হার্দিক প্যাটেল, অখিলেশ যাদব, ফারুক আবদুল্লা। সুতরাং এটা ঐতিহাসিক। তিনি বলেন, ‘মানুষের কাছে পৌঁছে যান। প্রচার করুন। আগামী দিনে তৃণমূল বড় ভূমিকা নিতে চলেছে।
আগামী লোকসভা ভোটে পার্শববর্তী ঝাড়খণ্ড, আসাম ও উড়িষ্যায় তৃণমূল নির্বাচনে লড়বে বলে জানান মুখ্যমন্ত্রী। তাই প্রতিবেশী রাজ্যগুলির সঙ্গে সম্পর্ক ভালো রাখতে এবং জনসংযোগ বাড়ানোর নির্দেশ দেন নেত্রী। বলেন, ‘পুরুলিয়ার নেতৃত্বকে বলছি, আগামী দিনে ঝাড়খণ্ডকে ভালবেসে অনেকগুলি লোকসভা আসনে আমরা লড়াই করব। ঝাড়খণ্ডের বিধানসভাতেও লড়ব। পুরুলিয়ার সীমান্ত এলাকায় বর্ডার আছে, বীরভূম জেলায় বর্ডার আছে, মেদিনীপুর জেলায় বর্ডার আছে। এই সব এলাকার মানুষদের সঙ্গে সম্পর্ক ভাল করুন’। তাঁর কথায়, ‘১৮ টি রাজ্য আমাদের সঙ্গে আছে। এবারের নির্বাচনে বিজেপি দেশছাড়া হবে। কেন্দ্র এক পয়সাও দেয় না। আমাদের রাজ্য আজ সব দিক দিয়ে বঞ্চনার শিকার। রাজভবন থেকে প্রধানমন্ত্রী ভবন, বিজেপি ছাড়া কাজ হয় না। শুধু গুণ্ডামি করে বেড়ায়’।
বিজেপির বিরুদ্ধে তোপ দেগে বলেন, ‘তৃণমূল কোনও দিন ধর্মকে ভাগ করে না। সব ধর্মকে ভালবাসে। পুরুলিয়া জেলায় শিল্পে সুযোগ আসছে। এখানেই কাজ পাবে ছেলেমেয়েরা। অযোধ্যা পাহাড়ের বান্দু গ্রামে ৯০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন হবে। সাড়ে চার হাজার কোটি টাকার প্রোজেক্ট। পাহাড়ে হোম ট্যুরিজম, লাক্ষা চাষ বাড়ানোর দিকে নজর দেওয়া হচ্ছে। কেউ এসে যদি এই সব উন্নয়নে বাধা দিতে যায়, তা মেনে নেব না’।
বিজেপির রথযাত্রাকে কটাক্ষ করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘বিজেপি রথযাত্রা করুক, আমরা রাজনৈতিক ভাবে রাবণ বধ করব। আমরা জগন্নাথের রথ দেখেছি, শ্রীকৃষ্ণের রথ দেখেছি। বিজেপি–র রাবণ–রথ দেখেছেন। রথের ভেতরে কনকনে ঠান্ডা, পুরো ফাইভস্টার হোটেল। বড় বড় লাক্সারি গাড়িতে রথ, আর সেই রথ থেকে এক–একটা নেতা বেরিয়ে দাঙ্গা লাগাবে, উস্কানি দেবে’!
তৃণমূল কর্মীদের উদ্দেশ্যে বলেন, ‘যে–রাস্তা দিয়ে বিজেপি রথযাত্রা করবে, সেই রাস্তাতেই পরের দিন পবিত্র যাত্রা করুন। ওরা রাবণ–যাত্রা করে রাস্তা অপবিত্র করে যাবে, আমরা পরের দিন পবিত্র যাত্রা করব। ওরা থাকবে রাবণ–রথে, আমরা থাকব মানুষের সঙ্গে’। মুখ্যমন্ত্রীর কথায়, ‘ওরা এবার রাজনৈতিক ভাবে ভারত থেকে বিদায় নেবে’। এই প্রসঙ্গে সিপিএমকেও তুলোধোনা করে মমতা বলেন, ‘নতুন করে সিপিএমের হাত ধরে ভেতরে লাল জামা, ওপরে গেরুয়া জামা পরে এলাকায় অশান্তির চেষ্টা হচ্ছে। আগে দিল্লি সামলাক, তার পর বাংলা দেখবে। এবার দিল্লিও হাতছাড়া হবে বিজেপি–র। সকাল থেকে শুনতে পাচ্ছি, ইভিএম মেশিনে গন্ডগোল মধ্যপ্রদেশে। ও–সব প্যঁাচ আমরা বুঝি, মানুষের ভোটকে কায়দা করে কবজা করার জন্যই এই গন্ডগোল। ইভিএম মেশিনে ভোট হলে তার দায়িত্ব কমিশনকে নিতে হবে’।