যাবতীয় পার্বণ শেষ হয়ে গেলেও বইপ্রেমীরা অপেক্ষা করছেন তাঁদের উৎসবের জন্য। কলকাতার আন্তর্জাতিক বইমেলার জন্য সারা বছর ধরে মানুষ অপেক্ষা করেন। পিডিএফ-এর এই রমরমাতেও মানুষ যে এখনও বই পড়েন তা প্রতিবার বইমেলার ভীড় দেখেই বোঝা যায়। বই নিয়ে মানুষের এই উন্মাদনাকে আরও বাড়িয়ে দিতে সাংবাদিক বৈঠকে গিল্ড সম্পাদক ত্রিদিব চট্টোপাধ্যায় জানান, ‘এবার বইমেলায় থাকবে ৬০০-র বেশি স্টল। লিটল ম্যাগাজিনের স্টল থাকছে ২০০টি৷ পার্ক হোটেলে বুধবার আগামী বইমেলার থিম কান্ট্রি গুয়াতেমালার লোগো উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এই ঘোষণা করেছেন তিনি।
এই প্রথম আন্তর্জাতিক কলকাতা বইমেলায় যোগ দিতে আসছে ইরান। যোগাযোগ করা হয়েছে পাকিস্তানের সঙ্গেও। যদি সব কিছু ঠিক থাকে, তা হলে পাকিস্তানের প্রকাশকেরাও অংশ নেবেন। প্রতি বছরের মতো থাকছে ব্রিটেন, আমেরিকা, চীন, জাপান, রাশিয়া, ভিয়েতনাম, লাতিন আমেরিকা, বাংলাদেশের স্টলও। দেশের অন্যান্য রাজ্য থেকেও প্রকাশকেরা যথারীতি থাকবেন। ২০১৯ সাল মহাত্মা গান্ধীর সার্ধ জন্মশততবর্ষ। তাই বইমেলার নানা অনুষ্ঠানে তাঁকে স্মরণ করা হবে।
এবারের থিম কান্ট্রি গুয়াতেমালা। তাই থিম কান্ট্রির লোগোর উদ্বোধন করেন গুয়াতেমালার রাষ্ট্রদূত জিয়োবান্নি কাসতিয়ো। তিনি জানালেন, ‘ঐতিহাসিক মায়াসভ্যতার অন্যতম কেন্দ্রভূমি গুয়াতেমালা। সেখানকার প্রকৃতি, ঐতিহ্য নিয়ে সেজে উঠবে প্যাভিলিয়ন। গুয়াতেমালার ২৪টি স্থানীয় ভাষার সাহিত্য, কবিতার বই থাকবে।’
আন্তর্জাতিক কলকাতা বইমেলা ২০১৯ এবারও হবে সল্টলেক সেন্ট্রাল পার্কে। কাজ চলার জন্য মিলনমেলা থেকে গত বছরই সরিয়ে আনা হয়েছে বইমেলার ঠিকানা। ঠিকানা বদলে বই কেনাবেচায় প্রভাব প্রসঙ্গে ত্রিদিববাবুর বক্তব্য, ‘২০১৭-র মিলনমেলার বিক্রিকে ছাপিয়ে গেছে ২০১৮-র সল্টলেক বইমেলার বিক্রিবাটা।’
গতবারে ঠিকানা বদল হলেও রাজ্য সরকার, বিধাননগর পুরসভা এবং পুলিশের সহযোগিতায় জমে উঠেছিল মেলা। যাতায়াতের সুবিধের জন্য এবারও থাকবে বাড়তি বাসের ব্যবস্থা। আশা করা হচ্ছে, এর মধ্যে ইস্ট–ওয়েস্ট মেট্রোও চালু হয়ে যাবে। নিরাপত্তার জন্য গিল্ডের তরফে এ বছরও থাকছে আরও আধুনিক মোবাইল অ্যাপ। ৩০ জানুয়ারি বইমেলা শুরু, চলবে ১০ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত। প্রতি বছরের মতো ৭ ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু হবে কলকাতা সাহিত্য উৎসব। বইমেলা শুরু হতে আর ঠিক বাকি দু’মাস, জোরকদমে চলছে বইপুজোর প্রস্তুতি। পাল্লা দিয়ে বাড়ছে পাঠকদের অপেক্ষার পারদও৷