রাজস্থান ও মধ্যপ্রদেশ, এই দুই রাজ্যেই বিধানসভা নির্বাচনে গো-হারান হারবে বিজেপি। এখনও অবধি বিভিন্ন সমীক্ষার ফল সেই বার্তাই দিচ্ছে। এবার এই বার্তাকেই জনসমক্ষে স্বীকৃতি দিলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মঙ্গলবার, পুরুলিয়া শহরের উপকণ্ঠে শিমুলিয়ায় জেলার হিন্দিভাষী মানুষের এক জমায়েত মঞ্চ থেকে মমতা বলেন, বিজেপি রাজস্থানে হারবে। মধ্যপ্রদেশেও হারবে বলে খবর পাচ্ছি।
পুরুলিয়া হিন্দিভাষী সম্মেলনের এই জমায়েতে আমন্ত্রিত হয়েছিলেন মমতা। আমন্ত্রিত ছিলেন সংসদ সদস্য অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়, মন্ত্রী ইন্দ্রনীল সেন, ডিজি বীরেন্দ্র-সহ আরও অনেকে। তিনি হিন্দি ভালো বলতে পারেন না, এই আক্ষেপ করে গতকাল সভার শুরুতেই ক্ষমা চেয়ে নেন মুখ্যমন্ত্রী। কিন্তু হাততালি আর হর্ষধ্বনিতে তাঁর ভালো হিন্দি না বলতে পারার আক্ষেপ দূর করে দিয়েছে উপচে পড়া ভিড়।
ব্যবসায়ী আর শিল্পপতিদের সেই জমায়েতে উপস্থিত হয়েছিলেন রাজস্থান, গুজরাত, উত্তরপ্রদেশ, বিহার এবং লাগোয়া ঝাড়খণ্ডের আদি বাসিন্দারাও। সভার সেই ভাবাবেগকে মাথায় রেখেই মুখ্যমন্ত্রী বলেন, নোটবন্দি এবং জিএসটি’র চাপে গোটা দেশের ব্যবসায়ীদের নাজেহাল অবস্থা। সাধারণ মানুষের পাশাপাশি ভয় পাচ্ছেন ব্যবসায়ীরাও। রাজস্থান, গুজরাতে খোঁজ নিন, অনেক ব্যবসায়ী দেশ ছেড়েছেন।
তবে কেন্দ্রে পরিবর্তন এলে এই পরিস্থিতি যে পাল্টাবে, সে ভরসাও জুগিয়েছেন দেশের বিরোধী জোটের মধ্যমণি। তাঁর নিদান, বিজেপি চলে গেলেই ব্যবসায়ী থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষ, সকলের মুখেই হাসি ফুটবে। তৃণমূল নেত্রীর নিদানে সায় দিয়েছে আশাবাদী জনতাও। তাঁর কথায়, দিল্লির কুর্সি চাই না। চাই শুধু মানুষের ভালবাসা, ভরসা আর বিশ্বাস।
সম্প্রীতির বার্তা দিয়ে তিনি আরও বলেন, কিডনি, লিভার, চোখ, নাক, হার্ট সব মিলিয়ে যেমন মানব শরীর, তেমনই সব ভাষা, ধর্ম, বর্ণ মিলিয়ে আমাদের দেশ ভারত। বাংলা তার একটা রেপ্লিকা। তাই কেউ নিজেকে আলাদা করে মাড়োয়ারি, গুজরাতি বা বিহারী ভাববেন না। দেশের মতো এ রাজ্যটাও আপনাদেরই। এখানে সবাই সমান। তাই মমতাদি’কে বাঙালি হিসেবে নয়, সেই পরিবারের একজন সদস্য ভাবুন।
শিমুলিয়ার মাঠে হিন্দিভাষী মানুষের এত বড় জমায়েত এবং মুখ্যমন্ত্রীর প্রতি তাঁদের আস্থা প্রদর্শন আর সম্বর্ধনা জ্ঞাপন যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল। তার মধ্যে আবার ঝাড়খণ্ডের জামতারার বাসিন্দা এক ব্যবসায়ী পরিবর্তিত জঙ্গলমহলে বিনিয়োগ করতে চেয়ে মুখ্যমন্ত্রীর কাছে আবেদনও করেছেন। ফলে এ থেকেই স্পষ্ট যে খোদ হিন্দিভাষীরাও এখন বীতশ্রদ্ধ মোদীর উপর।