‘শরীরে যেমন অনেক অঙ্গ থাকে তেমন দেশেও অনেক রাজ্য, অনেক ধর্ম, অনেক ভাষা। কিন্তু আসলে দেশটা এক। আমার মাথায় পাঞ্জাব, কিডনিতে রাজস্থান, লিভারে তামিলনাড়ু। এক চোখে ঝাড়খণ্ড, এক চোখে বিহার। কিন্তু শরীর একটাই’। এভাবেই শরীরের সঙ্গে দেশের তুলনা করে পুরুলিয়ার হিন্দীভাষীদের মন জিতে নিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
ঝাড়গ্রাম দিয়ে জঙ্গলমহল সফর শুরু করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। আজ মঙ্গলবার গিয়েছিলেন পুরুলিয়ায়। সেখানে প্রশাসনিক বৈঠকের পর মুখ্যমন্ত্রী শিমুলিয়ার ব্যাটারি ময়দানে হিন্দিভাষী সম্মেলনে যোগ দেন। সেখানেই স্বভাবসিদ্ধ ভঙ্গীতে বলেন, ‘দিল্লিতে বদল হলেই আপনাদের মুখে হাসি আর হাসি। রোশনি আর রোশনি।’ তারপরই জানিয়ে দেন, ‘দিল্লির কুর্সি চাই না। জনতার ভরসা আর ভালবাসা চাই।’
পোস্তায় জগদ্ধাত্রী পুজোর উদ্বোধনী ভাষণে হিন্দিভাষীদের কাছে আরও বেশি করে পৌঁছতে চাওয়ার ইঙ্গিত দিয়েছিলেন। আজ হিন্দীভাষীদের সভায় যোগ দিয়ে হিন্দী ভাষা-ভাষী মানুষদেরও পাশে থাকার বার্তা দিলেন মুখ্যমন্ত্রী। নোটবন্দির পর দেশে ব্যবসাপাতি লাটে উঠেছে বলে বিজেপির বিরুদ্ধে তোপ দেগে বলেন, ‘দেশে এখন শুধু ঝুটো আর বড় বড় ভাষণ। দেশের নেতা হবেন এমন, যাঁকে জনতা ভালবাসবে। আর এখন এমন নেতা এসেছেন, যাঁকে দেখে জনতা ভয় পাচ্ছে।’
কেন্দ্রীয় এজেন্সিগুলিকে রাজনৈতিক স্বার্থে বিজেপি ব্যবহার করছে, এই অভিযোগ আগেই তুলেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। সম্মেলনে সেকথা মনে করিয়ে দিয়ে মমতা বলেন, ‘ব্যবসায়ীরা ভয়ে ভয়ে রয়েছেন। এই বুঝি সিবিআই এল! এই বুঝি ইডি এল! এই বুঝি ইনকাম ট্যাক্স খেয়ে গেল!’
হিন্দীভাষী সম্মেলনে যোগ দেওয়াটা মুখ্যমন্ত্রীর মাস্ট্রারস্ট্রোক বলেই মনে করছে রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা। তাঁদের মতে, অনেকেই বলেন, হিন্দিভাষী ব্যবসায়ীরা বিজেপির স্বাভাবিক ভোট ব্যাঙ্ক। আজকের এই সম্মেলন এই ধারণাকেই ধাক্কা দিল। পাশপাশি লোকসভা ভোটের আগে হিন্দিভাষী ব্যবসায়ীদের মধ্যে গেরুয়াবাহিনীর প্রভাব ঠেকাতে এখন থেকেই কাজ শুরু করে দিলেন মমতা।