একদিকে বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। অন্যদিকে মানিক সরকার। সিপিএমের মতো দলের নেতা হয়েও বুদ্ধদেব স্বাধীনচেতা। কারাত গোষ্ঠীর তালে তাল মেলান না। অন্যদিকে দলের ধামাধরা মানিকের ‘জো হুজুর’ বলাই কাজ। তাই বোধহয় বাংলায় সিপিএমের রাজ্য সম্মেলনে বুদ্ধবাবুর ওপর যতটা খড়্গহস্ত ছিল দল, ত্রিপুরা সিপিএমের ২২ তম রাজ্য সম্মেলনে মানিকের প্রশাসনিক ব্যর্থতা নিয়ে দলের তরফে ততটাই ছিল নীরবতা। এই দুই নেতা যখন কাণ্ডারী, তখনই দুই রাজ্যে বাম দূর্গের পতন ঘটেছিল। অথচ পশ্চিমবঙ্গের রাজ্য সম্মেলনে কাঠগড়ায় তুলে কার্যত তীর শানানো হয়েছিল শুধুই বুদ্ধদেববাবুকে উদ্দেশ্য করে। সেখানে ত্রিপুরা রাজ্য সম্মেলনে মানিক সরকারকে দল দিল অনন্য রক্ষাকবচ। মানিকবাবুর প্রশাসনিক ব্যর্থতার পাশেই দাঁড়ালো দল। সিঙ্গুর-পর্বে দুর্গাপুর এক্সপ্রেসওয়ের উপর তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়য়ের নেতৃত্বে ২৪ দিনের ধর্না কেন তুলে দেওয়ার নির্দেশ দেননি বুদ্ধবাবু রাজ্যে সম্মেলনে উঠেছিল সেই প্রশ্ন। অন্যদিকে ত্রিপুরায় বাম আমলের শেষের দিকে জাতীয় সড়ক অবরোধ করে জনজাতি সংগঠন আইপিএফটি-র আন্দোলন, ধর্না না তোলায় শাবাসি পেলেন মানিকবাবু। ওয়াকিবহাল মহলের অভিযোগ, সিপিএম নেতাদের পছন্দ-অপছন্দের শিকড় খুব গভীরে। তাই কারাত লবির সঙ্গে গা ঘেঁষাঘেঁষি না করাটাই স্বাধীনচেতা বুদ্ধবাবুর ক্ষেত্রে কাল হয়েছে। এমনকি বনধের বিরোধিতা করায় তাঁকে রাজ্য সম্মেলনে ক্ষমাও চাইতে হয়েছিল। এমনই দ্বিচারী মনোভাব সিপিএমের। তাই ব্যর্থ অথচ ‘জো হুজুর’ মানিকের জন্য কারাতদের তরফে আছে দলের রক্ষাকবচ। তাই সম্মেলনে সরাসরি মানিকের প্রশাসনিক ব্যর্থতার পাশে দাঁড়াল দল। ‘রাজনৈতিক ও সাংগঠনিক ত্রুটি’র কথা স্বীকার করে নিল সিপিএম। এতে দলের দ্বিচারী মনোভাবই আরও একবার স্পষ্ট হল। পাশাপাশি বুঝিয়ে দিল, কারাতপন্থী হলেই ‘সাত খুন মাফ’ মিলবে সিপিএমে।
![বুদ্ধ দোষী হলেও 'বেকসুর' মানিক - কারাতপন্থী হলেই 'সাত খুন মাফ' সিপিএমে!](https://ekhonkhobor.com/wp-content/uploads/2018/11/Untitled-4-11.jpg)