আসামের বিজেপি বিধায়ক শিলাদিত্য দেব বাঙালি। তবে ‘বাঙালি’ পরিচয় বিসর্জন দিতে চান তিনি। তাঁর মতে, আসামে বসবাসকারী বাঙালিরা প্রকৃতঅর্থে অসমীয়াই। তাই পরের আদমশুমারিতে বাঙালিদের অসমিয়া পরিচয়ে নাম তোলারও পরামর্শ দিয়েছেন তিনি। এজন্য ‘অসমিয়া পরিচয়’ নামে একটি সংস্থাও গড়ে তুলেছেন শিলাদিত্য। সেখানে অবশ্য মুসলিমরা ব্রাত্য।
শিলাদিত্যের যুক্তিতে ভারতের বিভিন্ন রাজ্যের বসবাসকারী বাঙালিদের সেইসব রাজ্যের পরিচয় নিয়েই বাস করা উচিত। তাঁর এই মন্তব্যের পাল্টা কোনও মন্তব্য করতে নারাজ ‘অসম রাজ্য নাগরিক অধিকার রক্ষা সমন্বয় সমিতি-র সভাপতি তপোধীর ভট্টাচার্য। তাঁর কথায়, ‘এই ধরনের বক্তব্যে পাল্টা মন্তব্য করতে রুচিতে বাধে’। তাঁর মতে, ‘বাঙালি বাঙালিই। হিন্দু বাঙালি,মুসলিম বাঙালি বলে কিছু হয় না। আর এই পরিচয় মুছে দেওয়ার ষড়যন্ত্র চলছে গোটা দেশে’।
বিতর্কিত মন্তব্যের জেরে আসামের বিজেপির বাঙালি বিধায়ক শিলাদিত্য দেব এখন বেশ ‘নামী’। প্রায়শই আক্রমণাত্মক কথাবার্তা বলেন তিনি। শিলাদিত্যের কথায়, ‘হিন্দুরা তো আসামে থাকতেই পারেন। আপত্তি মুলসিমদের নিয়ে। তার কারণ ওরা দুটি দেশ পেয়েছে। পাকিস্তান আর বাংলাদেশ।’ অসমের জাতীয়তাবাদী নেতাদেরও কড়া সমালোচনা করেন শিলাদিত্য। তাঁর মতে, ১৯৭১-এর ২৪ মার্চের আগে বহু মুসলিম আসামে অনুপ্রবেশ করে রাজ্যটিকে ‘মিনি পাকিস্তান’ বানিয়ে তুলেছে। সেক্ষেত্রে ১৯৪৭-এর ১৫ আগস্ট ভিত্তির বছর ধরলে তবেই আসামের স্বার্থ সুরক্ষিত হতো।
অবশ্য আসাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন উপাচার্য শিলাদিত্যের সঙ্গে একমত নন। তাঁর কথায়, ‘বাঙালি কোনও অবস্থাতেই নিজেদের পরিচয় বিসর্জন দিতে পারে না। অসমের বাঙালিরাও ‘বাঙালি’ পরিচয়েই বসবাস করতে চায়’।