বছরের পর বছর ধরে রাজ্যে উপকূলবর্তী অংশের মৎস্যজীবীরা ঝুঁকি নিয়েই মাছ ধরতে যান। অতীতে দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার ফলে মৎস্যজীবীদের ট্রলার-নৌকার দুর্ঘটনায় পড়ার অজস্র উদাহরণ রয়েছে। মৎস্যজীবীদের সুরক্ষায় এই খামতি পূরণ করতেই এবার গভীর সমুদ্রে মাছ ধরতে যাওয়া মৎস্যজীবীদের জন্য অত্যাধুনিক লাইফ সাপোর্ট বোট চালু করবে রাজ্য সরকার।
আগামী ২৯ নভেম্বর রাজ্যের সুন্দরবন উন্নয়ন দফতর, মৎস্য দফতর-সহ আরও কয়েকটি দফতরের মধ্য সমন্বয় বৈঠক রয়েছে। সেই বৈঠকে এই নিয়ে আলোচনা হতে পারে বলেই খবর। রাজ্যের মৎস্যমন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিনহা বলেন, ‘এখন সামুদ্রিক মৎস্যজীবীদের জন্য কোনও অত্যাধুনিক লাইফ সাপোর্ট বোট চালু নেই। সেই কারণে এই লাইফ সাপোর্ট বোট চালু করার পরিকল্পনা করা হচ্ছে। এই বোট এখন না থাকলেও সুরক্ষা সংক্রান্ত কিছু পদক্ষেপ ইতিমধ্যেই গ্রহণ করা হয়েছে। উপযুক্ত পরিকাঠামোও তৈরি করা হয়েছে।’
ইলিশ, পমফ্রেটের মতো হাতেগোনা কিছু মাছ বাদে এ রাজ্যের মৎস্যজীবীদের জালে যে সব সামুদ্রিক মাছ ধরা পড়ে তার অধিকাংশই যায় অন্য রাজ্যে। পাশাপাশি বিদেশেও রপ্তানি হয়। মমতার আমলে পরিকাঠামোর অনেক উন্নতি হওয়ায় সামুদ্রিক মাছ রপ্তানিতে অনেকটাই এগিয়েছে বাংলা। বাম জমানায় সামুদ্রিক মাছ রপ্তানি করে যা আয় হয়েছে, তৃণমূল জমানায় সেই অঙ্ক অনেকটাই বেড়েছে। কোটি কোটি টাকার এই শিল্পে জড়িয়ে রয়েছেন লক্ষ লক্ষ মানুষ।
২০১০ সালের মেরিন ফিশারিস সেনসাস অনুসারে উপকূলবর্তী ১৮৮ টি গ্রাম থেকে মৎস্যজীবীরা গভীর সমুদ্রে মাছ ধরতে যায়। উপকূলবর্তী অঞ্চলের ৭৬৯৮১ পরিবার সরাসরি এই শিল্পে জড়িয়ে রয়েছে। যাঁদের মধ্য প্রায় ৫৩ হাজার পরিবার বংশ পরম্পরায় এই পেশায় যুক্ত রয়েছে। রাজ্যের প্রায় চার লক্ষ মানুষ যে শিল্পের সঙ্গে জড়িয়ে, সেখানে কোনও রকম ঝুঁকি নিতে চায় না সরকার। তাই এবার থেকে ট্রলার মালিকদের এই লাইফ বোট রাখতে হবে বলে সরকারি তরফে জানানো হয়েছে।