নজির গড়ল কলকাতা পুরসভা। স্বাধীনতার পর এই প্রথম কলকাতার মেয়র পদে নির্বাচিত হলেন কোনও সংখ্যালঘু। তিনি ফিরহাদ হাকিম। ডেপুটি মেয়র হচ্ছেন অতীন ঘোষ।
একজন মুসলমান হয়েও তিনি কলকাতার অন্যতম বড় পুজোর উদ্যোক্তা। এবার সেই ফিরহাদকে কলকাতার মহানাগরিক পদে নির্বাচিত করে কার্যত ইতিহাস গড়লেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সম্প্রীতির এক অনন্য উদাহরণ তৈরি করলেন তিনি। বিরোধীদের মুখে ঝামা ঘষে বুঝিয়ে দিলেন এটাই বাংলার সংস্কৃতি।
শোভনের ছেড়ে যাওয়া পদে ফিরহাদ হাকিমের স্থলাভিষেকরও পক্রিয়া শুরু হয়ে গেছে বিধানসভায়। এদিন পুর নিয়মে সংশোধনী আনে রাজ্য সরকার। এবং বিধানসভায় সেই বিল পেশ করেন খোদ পুর ও নগরোন্নয়ন মন্ত্রী তথা কলকাতার ভাবী মেয়র ফিরহাদ হাকিম। উল্লেখ্য, শোভনের সঙ্গেই ডেপুটি মেয়রের পদ থেকে সরছেন ইকবাল আহমেদ। সূত্রের খবর, তাঁর শারীরিক অবস্থা ডেপুটি মেয়রের মতো পদে কাজ করার জন্য সহায়ক নয় বলেই সরছেন তিনি। তাঁর পরিবর্তে কলকাতা মিউনিসপাল কর্পোরেশনের ডেপুটি মেয়র হচ্ছেন অতীন ঘোষ।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মেয়র পদে অভিজ্ঞ কাউকে বসাতে চেয়েছিলেন। সেই মতো মঙ্গলবারই ফিরহাদ হাকিমকে ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছিল। গত ৬ মাসে খলিল আহমেদকে পুরসভার বিভিন্ন কাজ ফিরহাদ হাকিমের পরামর্শ নিয়ে করার নির্দেশ দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। ফিরহাদ হাকিম দীর্ঘদিন কাউন্সিলর হিসেবে কাজ করেছেন। সেই অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগাতে চেয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। সেই মতো ফিরহাদ হাকিমকেই বেছে নেওয়া হয়েছে। ফিরহাদ হাকিম বর্তমানে পুর ও নগর উন্নয়ন দফতরের মন্ত্রী। একই সঙ্গে তিনি দেখবেন আবাসন দফতরও। সেদিক থেকে কলকাতার মতো মেট্রোপলিটান শহরে তাঁর কাজে সুবিধা হবে বলেই মত ওয়াকিফহাল মহলের একাংশের। একই সঙ্গে কলকাতা পুরসভার কাজেও গতি আসবে বলে আশাবাদী কেএমসি।
এখানেই শেষ নয়, স্বাধীনতা পর এই প্রথম মহানাগরিক হিসেবে সংখ্যালঘু মুখও পাচ্ছে কলকাতা। প্রাক স্বাধীনতা পর্যায়ে আবুল কাসেম ফজলুল হক (১৯৩৫-৩৬), আব্দুর রহমান সিদ্দিকি (১৯৪০-১৯৪১), সইদ বদরুজ্জা (১৯৪৩-৪৪), সইদ মহম্মদ উসমানের (১৯৪৬-৪৭) মতো সংখ্যালঘু নেতারা মেয়র হলেও স্বাধীনতার পর এই প্রথম সংখ্যালঘু কোনও নেতা কলকাতার মেয়র হলেন।