কলকাতার বেশ কয়েকটি জায়গা থেকে সাংকেতিক ভাষায় রহস্যময় সিগন্যালের হদিশ পেলেন কয়েকজন অপেশাদার রেডিও অপারেটর। বেশ কয়েক সপ্তাহ ধরে এই সিগন্যাল আনাগোনা করছে শহরের আনাচে-কানাচে। ঘটনায় জঙ্গি-যোগ থাকতে পাড়ে বলে আশঙ্কা ওয়াকিবহাল মহলের। এর ফলে রেডিও সিগন্যালের ওপর প্রতিনিয়ত নজর রাখা হচ্ছে বলে জানা গেছে।
এইভাবে যে জঙ্গি কার্যকলাপ চলতে পারে এমন সম্ভাবনাও উড়িয়ে দিচ্ছেন না গোয়েন্দা অফিসারেরা। কারণ মোবাইল বা ইমেলের মাধ্যমে কথাবার্তা চালালে তা সহজেই র্যাডারে ধরা পড়ে যায়। তাই এবার নিজেদের মধ্যে তথ্য আদানপ্রদানের জন্য জঙ্গীরা রেডিও সিগন্যালিং পরিষেবা গ্রহণ করতে পারে বলেই মনে করছে গোয়েন্দা দফতর। এর আগে ২০১৬ সালে এই ধরনের সিগন্যাল নজরে এসেছিল। বসিরহাট ও সুন্দরবন অঞ্চলে বাংলা ও উর্দু ভাষায় কথা বলতেন কেউ। এবারও সেরকম কিছু রয়েছে কিনা তা খতিয়ে দেখছে তদন্তকারীরা।
ঘটনার সূত্রপাত কালীপুজোর ঠিক আগে। প্রথম বিষয়টা লক্ষ্য করেন কলকাতার হ্যাম রেডিও অপারেটররা। প্রথম ওই সিগন্যাল আসে উত্তর ২৪ পরগণার সোদপুর থেকে। তারপর চুঁচুড়া থেকে পাওয়া যায় সিগন্যাল। শহরের একেবারে কাছে শিয়ালদহ স্টেশনের আশেপাশে থেকেও এসেছে একই সিগন্যাল। কলকাতা থেকে ২৫-৩০ কিলোমিটার ব্যাসার্ধের মধ্যে অবস্থিত অঞ্চলগুলি থেকেই এই সাংকেতিক ও দুর্বোধ্য রেডিও সিগন্যাল ধরা পড়ছে বলেও জানা গিয়েছে। ওই সিগন্যালে যারা কথোপকথন চালায় তারা আফগানিস্তানের পুশতু ভাষায় কথা বলে।
এই সিগন্যালের খবর পাওয়ার পরেই হ্যাম রেডিও অপারেটররা ঘটনাটা পুলিশকে জানান। এছাড়া, কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা এবং কেন্দ্রীয় যোগাযোগ মন্ত্রককেও ঘটনাটি সম্পর্কে অবগত করা হয়েছে।
এই ঘটনা সম্পর্কে বেঙ্গল অ্যামেচার রেডিও ক্লাবের সভাপতি অম্বরীশ নাগ বিশ্বাস বলেন, ‘বেশ কিছু সপ্তাহ ধরে বিশেষ করে মধ্যরাতে আমরা কিছু সাংকেতিক ভাষার কথোপকথন শুনতে পাচ্ছি। পুরো বিষয়টা বেশ রহস্যময়। কারণ আমরা যখনই চেষ্টা করি তাদের সঙ্গে কথা বলার, তখনই সেটা থেমে যায়। এমনকী তাদের পরিচয় জিজ্ঞাসা করে পুরো রেডিওটাই স্তব্ধ হয়ে যায়’।
ব্যাপারটি সম্পর্কে ওয়াকিবহাল পশ্চিমবঙ্গ পুলিশের এডিজি (টেলিকমিউনিকেশন) দেবাশিস রায়ও। তিনি বলেন, ‘আমরা অত্যন্ত গুরুত্ব সহকারে পরিস্থিতির ওপর নজর রাখছি। আপাতত এই বিষয়ে যা তথ্য পাওয়া গিয়েছে, তা সবই কেন্দ্রীয় সংস্থার হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। খুব শীঘ্রই তদন্তের পক্ষে আরও ইতিবাচক কিছু জানতে পারা যাবে বলেই আমরা আশাবাদী’।