আপনি কি জানেন প্রতি ঘন্টায় ক’জন পুরুষ আত্মহত্যা করেন? ক’জন পুরুষ ঘরোয়া হিংসার শিকার হন? ক’জন পুরুষ ধর্ষণ বা শ্লীলতাহানির দায়ে জেল খাটেন আর শেষে বেকসুর খালাস হন? কজন পুরুষ স্রেফ সন্দেহের কারনে গনধোলাই খান? যদি মহিলা কমিশন থাকে, তবে রাষ্ট্র কেন পুরুষ কমিশন চালু করবে না? প্রয়োজন নেই Men’s Day?
Regressive ভাবছেন? প্যানপ্যানে লাগছে? সিমপ্যাথি নেওয়ার চ্যাটচ্যাটে লেখা ভাবছেন? কদাকার পুরুষত্ব প্রীতি জাগলো ভাবছেন? পালটা খিস্তি করবেন ভাবছেন? ভাবুন। তবে কোন না কোন দিন কাউকে না কাউকে এই লেখা লিখতে হতই। আমার ধারনা সেন্সিবল, মুক্তমনা “অর্ধেক- আকাশ” এই লেখার সাথে সহমত হবেন। সমব্যথী হবেন। ক্ষমা করবেন আজ মেয়েদের জন্য এই লেখাটা লিখতে পারলাম না বলে। ক্ষমা করবেন একচোখা হতে পারলাম না বলে।
অভিনেত্রী জায়রা ওয়াসিমের প্লেনের মধ্যে শ্লীলতাহানির ঘটনাটা মনে আছে? অভিযোগ ছিল, প্রথমে সিটের পাশে হাত রাখার জায়গায় নিজের পা তুলে দেন অভিযুক্ত। প্রতিবাদ করায় তিনি বলেন, বিমানযাত্রার ধকলে তিনি ক্লান্ত, তাই বিশ্রাম নেওয়ার জন্য সেখানে পা তুলে রেখেছেন। জায়রা জানিয়েছে, কিছু পর বিমান কেবিনের লাইট ডিম হতেই ঘুমিয়ে পড়ে সে। ঘুমের মধ্যেই সে টের পায় তার ঘাড় ও পিঠে আপত্তিকর ভাবে পা দিচ্ছেন ওই ব্যক্তি। হ্যাঁ!!! সিটের ফাঁক দিয়ে পা দিচ্ছে গলায়। আবার ইনসেনসেটিভ মনে হবে কিন্তু প্রশ্ন ছিল, মোটা হুমদো ওই লোকটিকে Aerobics জানতেন? যারা প্লেনে বা ভলবো বাসে চড়েন জানেন, দুটো সিটের মাঝে কতটুকু জায়গা থাকে। যাই হোক। ময়ূখ ঘোষের ন্যাকাকান্না না, তথ্য ও সাক্ষীর বয়ান দেখে কোর্ট “ভদ্র”লোকটিকে খালাস করে দেয়। এটি একটিমাত্র ঘটনা। এরকম হাজার খানেক মামলা প্রতি বছর পাবেন। এরপর কেউ খোঁজ নেয় না, কেউ প্রচার করেনা পুরুষটি নির্দোষ ছিল, কেউ আওয়াজ তোলে না মেয়েটির বিরুদ্ধে। ভয় পাছে নারীবিরোধী হয়ে পরি।
সার্ভে তে প্রকাশিত, নির্ভয়াকান্ডের পর থেকে ভারতে ধর্ষণ এর মামলা অনেকগুন বেশী নথিবদ্ধ হয় এখন। পুলিশ ও বেশিররভাগ ক্ষেত্রে মেয়েটির স্বপক্ষেই থাকে। এটা ধরে নিয়েই যে মেয়ের বয়ানই শেষ কথা।
আন্তর্জাতিক সার্ভে যা পরে BBC তেও প্রকাশিত, এটা ও জানায় যে ১০০ টি ধর্ষণের মামলার মধ্যে ৪০টি মিথ্যে মামলা হয়। চমকাবেন না। হ্যা, মামলাগুলি মিথ্যে প্রমাণিত হয় পরে বা দোষী বেকসুর খালাস পেয়ে যায়। অর্থাৎ যে ৪০ টি মেয়েটি অভিযোগ করেছিল, তারা মিথ্যে বলেছিল বা ক্ষমতার কোন খেলা ছিল নাকি?Matured Feminism এ মানতে শিখুন, যে মেয়েরাও মিথ্যে বলে, সব পুরুষই ধর্ষক হয় না।
বর্তমান সময়ে এমন ও একটা ধর্ষণ-ঘটনা ভাবুন। প্রথমে অভিযুক্ত গ্রেফতার হয়। তার জীবন জীবিকা বাড়ি ঘর ইত্যাদির সব খবর কাঁটাছেড়া হয় চ্যানেলে চ্যানেলে। এরপর তাকে সামান্যতম আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ না দিয়ে সিলুয়েট বাইট চলতে থাকে। একসময় দোষী বেকসুর খালাস হয়। তারপর আবার এক নতুন ঘটনা নিয়ে হৈচৈ। এবার ধরুন যে অভিযুক্ত ছিল সে তো বুকে নির্দোষ হওয়ার বোর্ড লাগিয়ে ঘুরতে পারবে না ২৪ ঘন্টা। ততদিনে পাড়ার ছেলে তার বউকে রেপিস্টের বউ বলে ডাকে। স্কুলে অন্য বাচ্চাদের মায়েরা তার বাচ্চার সাথে মিশতে দেয় না। চাকরিটাও গেছে। এরপর?
আমরা কি এরকম আইন এখনো আনতে পেরেছি যেখানে মিথ্যে মামলা হয়েছে প্রমাণিত হলে, মহিলাকেও জেলভোগ ও জরিমানা দিতে হবে। আমরা কি ফলোআপ করেছি সেই সমস্ত ঘটনার যেখানে শেষে পুরুষ নির্দোষ প্রমাণিত হয়েছিল? করিনি কারন আমরা ও মশলা খুঁজি। আমরা ও অসহায় নারী, অসুরের মত পুরুষ ধর্ষক, সিমপ্যথেটিক সমাজ, অপদার্থ পুলিশের গল্প পেলে চেটেপুটে খাই। তাতে কোন পুরুষ লজ্জায় অপমানে গলায় দড়ি দিলে দিক। সমাজ শিখিয়েছে আমাদের। Mard কো Dard নেহি হোতা!
( মতামত লেখকের ব্যক্তিগত )