কেন্দ্র-রাজ্য সংঘাত চরমে। রাজ্যে তদন্ত চালাতে গেলে আগে থেকে অনুমতি নিতে হবে সিবিআই এবং অন্যান্য কেন্দ্রীয় সংস্থাগুলিকে। একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করে এই সিদ্ধান্তের কথা জানাল সরকার। প্রসঙ্গত, ১৯৮৯ সালে রাজ্যের তৎকালীন বাম সরকার জেনারেল কনসেন্ট দিয়ে জানিয়েছিল, রাজ্যে কেন্দ্রীয় সংস্থাগুলি তদন্ত করতে এলে আগাম অনুমতির প্রয়োজন নেই। পরে জানালেই হবে। সেই অনুমতিই প্রত্যাহার করল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার।
দুদিন আগে অন্ধ্রপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী চন্দ্রবাবু নাইডু একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করে জানান, এখন থেকে সিবিআই রাজ্যে কোনও তল্লাসি চালাতে পারবে না। তদন্তের জন্যেও রাজ্য সরকারের অনুমতি নিতে হবে। নেতাজি ইন্ডোরে দলের বর্ধিত কোর কমিটির বৈঠকে চন্দ্রবাবু নাইডুর সিদ্ধান্তকে সমর্থন জানান মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বলেন, ‘অন্ধ্রপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী সঠিক কাজ করেছেন। উনি সিবিআইকে রাজ্যে ঢোকার অনুমতি দেবেন না। আমিও আইনটা দেখে নেব। আগে প্রয়োজন ছিল না। কিন্তু এখন হয়েছে। কারণ সিবিআই এই মুহূর্তে কোনও তদন্তকারী সংস্থা নয়, বিজেপির নিয়ন্ত্রিত এক সংস্থায় পরিণত হয়েছে৷ সিবিআই স্বাধীনভাবে কাজ করছে না, বিজেপির দলীয় দপ্তর থেকেই সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রিত হচ্ছে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা’।
নেতাজি ইন্ডোরের সভার পর নবান্নে মুখ্যসচিব, স্বরাষ্ট্রসচিব ও নিরাপত্তা উপদেষ্টাদের সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী একটি উচ্চ পর্যায়ের বৈঠকে বসেন। এরপরই বিজ্ঞপ্তি জারি করে জানিয়ে দেওয়া হয়, সরকারের অনুমোদন ছাড়া সিবিআই রাজ্যে তদন্ত চালাতে পারবে না।
সিবিআই-এর ‘চোখরাঙানি’ নিয়ে আগেও একাধিকবার সরব হয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷ কেন্দ্রের বিরুদ্ধে রাজনৈতিক স্বার্থে সিবিআইকে ব্যবহার করার অভিযোগও করেছেন তিনি৷ সরকারি কর্তারা মনে করেন, সিবিআই তদন্তের নামে যে ভাবে যুক্তরাষ্ট্রীয় আদর্শকেই ক্ষুণ্ণ করছে তা মেনে নেওয়া যায় না। এসব কারণেই সিবিআইয়ের পায়ে কার্যত বেড়ি পরিয়ে দিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
বাংলার মুখ্যমন্ত্রীর এই সিদ্ধান্তকে পূর্ণ সমর্থন জানিয়েছেন দিল্লীর মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল। বরং এক ধাপ এগিয়ে তিনি বলেন, ‘বিনা অনুমতিতে আয়কর দপ্তরেরও রাজ্যে ঢোকা বন্ধ করা হোক। সব দেখেশুনে রাজনৈতিক বিশ্লেষকেরা বলছেন, এতদিন লড়াইটা সিবিআই বনাম সিবিআই ছিল। এবার সেটা নাটকীয় ভাবে মোড় নিল সিবিআই বনাম জোটের লড়াইয়ে।