বাঙালির বারো মাসে তেরো পার্বণের অন্যতম পার্বণ জগদ্ধাত্রী পুজো দেখতে এবার চন্দননগরে এসে হাজির হলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শুধু তাই নয়। গতকাল চন্দননগরের পালপাড়া পুজো মণ্ডপে মহাষ্টমীর পুষ্পাঞ্জলিও দিলেন তিনি।
শুক্রবার বেলা পৌনে ২টো নাগাদ মুখ্যমন্ত্রীর হেলিকপ্টার এসে পৌঁছায় চন্দননগর স্পোর্টস অ্যাসোসিয়েশন ময়দানে। স্থানীয়দের কাছে যা কুঠির মাঠ নামেই পরিচিত। তাঁর সঙ্গেই ছিলেন চন্দননগরের বিধায়ক তথা রাজ্যের তথ্য ও সংস্কৃতি এবং পর্যটন দপ্তরের প্রতিমন্ত্রী ইন্দ্রনীল সেন।
মুখ্যমন্ত্রীকে স্বাগত জানাতে কুঠির মাঠে উপস্থিত ছিলেন পুলিশ কমিশনার অজয় কুমার, জেলাশাসক জগদীশপ্রসাদ মীনা, পুলিস সুপার (গ্রামীণ) সুকেশ জৈন, সাংসদ রত্না দে নাগ প্রমুখ। সেখান থেকে বাকিদের নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী সোজা চলে আসেন পালপাড়ার পুজো মণ্ডপে। সেখানে আগে থেকেই পুজো উদ্যোক্তা এবং স্থানীয়রা হাজির হয়েছিলেন তাঁকে স্বাগত জানাতে।
পুষ্পাঞ্জলি দেওয়ার পর গোটা মণ্ডপ ঘুরে দেখে অভিভূত মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘চন্দননগর যে কোনও দিন কলকাতার পুজোকে ছাপিয়ে যাবে।’ একইসঙ্গে মণ্ডপসজ্জার প্রশংসা করে তিনি বলেন, ‘অসাধারণ কাজ করেছেন শিল্পীরা। আন্দামানের জারোয়া উপজাতির জীবনযাত্রার গোটা চিত্রটাই তুলে ধরা হয়েছে মণ্ডপসজ্জার মধ্যে দিয়ে।’
পাশাপাশি চন্দননগরের জগদ্ধাত্রী পুজো প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘দুর্গাপুজোয় আমরা বিশ্ববাংলা পুরস্কার দিই। পালপাড়ার মণ্ডপ দেখার পর আমার মনে হয়েছে, জগদ্ধাত্রী পুজোয় চন্দননগরেও বিশ্ববাংলা পুরস্কার দেওয়া উচিত। তাই আমি এই বছর থেকেই তা চালু করলাম। এবার থেকে চন্দননগরের ১০টি জগদ্ধাত্রী পুজো সরকারের তরফে বিশ্ববাংলা পুরস্কার পাবে।’
বিষয়টি অবিলম্বে কার্যকর করার জন্য তিনি এদিন জেলাশাসক এবং পুলিশ সুপারের নেতৃত্বে একটি কমিটি গঠন করে দেন। তাঁর কথায়, ‘এই কমিটিতে স্থানীয় ৪-৫ জন বিশিষ্ট মানুষও থাকবেন। ওই কমিটি ঠিক করবে বিশ্ববাংলা পুরস্কার কোন ১০টি পুজো কমিটি পেতে পারে।’
মুখ্যমন্ত্রী এও বলেন, ‘চন্দননগরের প্রতিমা বিসর্জনের কার্নিভাল দেখেই কলকাতায় দুর্গাপুজোর কার্নিভাল চালু করা হয়েছে।’ চন্দননগরে পুজোর পাশাপাশি কার্নিভালের আয়োজন চলতে থাকে। তাই এবার থেকে কলকাতার পুজোগুলোও যাতে আগে থেকেই পুজোর সঙ্গে কার্নিভালটাও প্ল্যান করে রাখে, তিনি সে দিকে নজর রাখবেন।
গতকাল চন্দননগরের আলোকসজ্জারও ভূয়সী প্রশংসা করেন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর মতে, ‘আলোকসজ্জায় চিরকালই চন্দননগর অনেক এগিয়ে। চন্দননগরের মতো আলো সারা পৃথিবী ঘুরলেও মিলবে না। চন্দননগরের আলো ছাড়া বাঙালির কোনও উৎসবই যেন সম্পূর্ণ হয় না।’