এবার মি টু-র ঢেউ এসে লাগল যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে। আর সেই ঢেউয়ে লণ্ডভণ্ড হয়ে গেল কলকাতা সিপিএম।
সম্প্রতি ফেসবুকে একটি পোস্ট করেছেন যাদবপুরের প্রাক্তনী এবং এসএফআই সদস্য আত্রেয়ী সেনগুপ্ত। এটাকে পোস্ট না বলে বোমা বলাই ভালো। ওই পোস্ট-বোমায় কলকাতা সিপিএমের একাধিক নেতা-কর্মীর বেহিসেবি যৌনাচারের মুখোশ খুলে দিয়েছেন তিনি।
এমনিতেই যৌন কেলেঙ্কারির অভিযোগে কলকাতা সিপিএমের টালমাটাল অবস্থা। সিপিএমের কলকাতা জেলা কমিটির সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য কৌস্তভ চট্টোপাধ্যায়ের যৌন কেলেঙ্কারির ভিডিও ভাইরাল হয়ে যায়। সৌম্যজিৎ রজকের কোনও ভিডিও প্রকাশ্যে না এলেও নিজেই দোষ স্বীকার করে দলকে চিঠি লেখেন তিনি। কৌস্তভও দোষ কবুল করে দলকে চিঠি দিয়েছিলেন। শেষে কৌস্তভ ও রজকের ‘অপকর্ম’-এর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে বৈঠক ডাকতে বাধ্য হয় আলিমুদ্দিনের নেতারা। কিন্তু তার মধ্যেই প্রকাশ্যে এল নতুন বোমা। সৌজন্যে যাদবপুরের প্রাক্তনী এবং এসএফআই নেত্রী আত্রেয়ী সেনগুপ্ত। গোটা ঘটনায় তোলপাড় পড়ে গেছে লাল বাড়িতে।
যেসব এসএফআই এবং সিপিএম নেতা-কর্মীরা যৌন ইঙ্গিত থেকে হেনস্থা করেছেন সেইসব নাম ধরে ধরে তাঁদের অপকর্মের কথা পোস্টে উল্লেখ করেছেন আত্রেয়ী। জানিয়েছেন, কৌস্তভ, রজকের পাশাপাশি কলকাতা এসএফআইয়ের সম্পাদক সমন্ময় রাহাও তাঁকে যৌন হেনস্থা করেছেন।
https://www.facebook.com/riya.sengupta.395/posts/2867094939983523
বিশেষ করে সৌম্যজিৎ এবং সমন্ময়ের বিরুদ্ধে যাবতীয় ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন আত্রেয়ী। ফেসবুক পোস্টে লিখেছেন, ‘এদের জন্য বিভিন্ন সময়ে একাধিকবার আমাকে অপ্রীতিকর পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে হয়েছে। যখনই আমি ওদের যৌনতার পুতুল হতে অস্বীকার করেছি, তখনই আমার বিরুদ্ধে ব্যঙ্গ বিদ্রুপ ধেয়ে এসেছে। এমনকি আমার উদ্দেশ্যে ‘দেশী মাল’ ‘কচি মাল’ ‘অতিরিক্ত নারীবাদী’ এমনকি ‘ওকে লাগাতে চাই’ ধরনের শব্দবন্ধও ব্যবহৃত হয়েছে’।
গত বছর অর্থাৎ ২০১৭ সালে দলের কাজে নয়া দিল্লী যাওয়ার সময় ট্রেনের মধ্যেও তাঁকে সমন্ময় এবং রজকের যৌন হেনস্থার কথা উল্লেখ করে আত্রেয়ী লিখেছেন, ‘শুধু আমি নয়, যে কোনও সাধারণ মেয়ের সঙ্গে ওরা এমন আচরণই করত’। এই ফেসবুক পোস্টে এই অপরাধের বিহিত চেয়েছেন আত্রেয়ী। জানিয়েছেন, ‘আমি সমস্ত রকম প্রশ্নোত্তরের জন্য তৈরি’।
এমন বেসামাল পরিস্থিতিতে টালমাটাল অবস্থা কলকাতা সিপিএমের। গোটা বিষয়টিকে ধামাচাপা দেওয়ার আপ্রাণ চেষ্টা করছেন সিপিএম নেতা মানব মুখোপাধ্যায়। এই অবস্থায় সিপিএম দোষীদের শাস্তি দেয় কি-না এখন সেটাই দেখার।