গতকাল, বুধবার বহরমপুরে ছিল মান্নান হোসেনের স্মরণসভা। সেখানে যোগ দিতে এসে, রাজ্যের পরিবহণমন্ত্রী তথা তৃণমূলের জেলা পর্যবেক্ষক শুভেন্দু অধিকারী বলেন, ২০১৯ সালের লোকসভা ভোটে অধীর চৌধুরীকে পরাস্ত করার সম্পূর্ণ দায়িত্ব আমি নিজের কাঁধে তুলে নিলাম।
মন্ত্রী ছাড়াও সভামঞ্চে উপস্থিত ছিলেন দলের জেলা চেয়ারম্যান মহম্মদ সোহারব, জেলা সভাপতি সুব্রত সাহা, সহসভাপতি অশোক দাস, রাষ্ট্রমন্ত্রী জাকির হোসেন, প্রয়াত নেতার দুই ছেলে সৌমিক হোসেন ও রাজীব হোসেন, জেলা পরিষদের সভাধিপতি মোশারফ হোসেন মণ্ডল-সহ আটজন বিধায়ক, পুরসভা, পঞ্চায়েত সমিতি ও গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রতিনিধিরা ও অন্যান্য নেতা-নেত্রীরা।
শহরের তৃণমূলের জেলা কার্যালয়ে দলের প্রয়াত জেলা সভাপতি মান্নান হোসেনের স্মরণসভার আয়োজন করা হয়েছিল। সেখানেই শুভেন্দু বলেন, রাজনীতিতে আমার বাবাকে যাঁরা অপমান করেছিলেন, তাঁদেরকে গণতান্ত্রিকভাবে পরাস্ত করেছি। এই জেলার মান্নান হোসেনকে অপমান করেছেন অধীর চৌধুরী। অতীশ সিনহা, শঙ্করদাস পাল, আব্দুস সাত্তারের মতো নেতাদেরও অপমান করা হয়েছে। তাই আগামী লোকসভা ভোটে অধীর চৌধুরীকে পরাস্ত করার দায়িত্ব আমি নিজের কাঁধে তুলে নিলাম।
তিনি আরও বলেন, ২০১১ সালের বিধানসভা নির্বাচনে জোট প্রার্থীর বিরোধিতা করেছিলেন অধীরবাবু। ২০১৬ সালের বিধানসভা ভোটে সিপিএমের সঙ্গে জোট করেও তেমন কিছু করতে পারেনি তাঁর দল। বরং তৃণমূলের ভোট এক ধাক্কায় বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩২শতাংশ। ডোমকল পুরসভা নির্বাচনে এলাকায় থেকে ভোট করবেন বললেও ভোটের দিন তাঁকে এলাকায় দেখাই গেল না। তিনি জেলায় নয়, কলকাতা আর দিল্লি ঘুরে বেড়ান। তবে এখন কলকাতাতেও তাঁর স্থান নেই।
শুভেন্দুর দাবি, পঞ্চায়েত নির্বাচনে প্রার্থী দিতে না পেরে ভোট লুটের অভিযোগ তুলেছিলেন। এখন বলছেন, লোকসভায় কেন্দ্রীয় বাহিনী দিয়ে ভোট হবে। আমিও বলছি, কেন্দ্রীয় বাহিনী দিয়ে ভোট হলেও আমরাই জিতব। মানুষ তৃণমূলের সঙ্গেই আছে। এবার রাজনৈতিকভাবে অধীর চৌধুরী ধ্বংস হবে।
এদিন সভায় শুভেন্দুবাবুকে বহরমপুর লোকসভা কেন্দ্র থেকে প্রার্থী করার পক্ষে সওয়াল করে বিধায়ক তথা জেলা তৃণমূলের কার্যকরী সভাপতি নিয়ামত শেখ বলেন, মান্নান হোসেনের মৃত্যুর পর জেলায় দলের হাল ধরেছেন শুভেন্দু অধিকারী। তাই বহরমপুর লোকসভা কেন্দ্র থেকে তাঁকে দাঁড়ানোর প্রস্তাব দিচ্ছি।
সভা শেষে শুভেন্দু অবশ্য বলেন, লোকসভা ভোটে কে কোথায় প্রার্থী হবে, তা ঠিক করবেন আমাদের দলনেত্রীই। কিন্তু বহরমপুর-সহ মুর্শিদাবাদ জেলার তিনটি লোকসভা কেন্দ্রেই জোড়াফুল ফুটবে। সভার পর শুভেন্দু প্রয়াত নেতার শেয়ালমারার বাড়িতে যান। সেখানে প্রয়াত নেতার সমাধিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধাজ্ঞাপন করেন তিনি। তাঁর সঙ্গে জেলার অন্যান্য নেতা-নেত্রীরাও।