বুলেটের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে রাজত্ব করল ব্যালট। আইইডি বিস্ফোরণ, গুলির লড়াইয়ের চোখরাঙানিকে অগ্রাহ্য করে ছত্তিশগঢ়ে শেষ হল প্রথম দফার ভোট গ্রহণ। মাওবাদী অধ্যুষিত বস্তার ডিভিশনের ১২টি আসন-সহ ৮ টি জেলার ১৮টি কেন্দ্রে ভোট পড়েছে ৭০ শতাংশ। প্রথম দফায় ১৯০ জন প্রার্থীর ভাগ্য নির্ধারণ করেন ৩১ লক্ষ ভোটার৷ ছিলেন ১৬ হাজার ৫০০জন ভোটকর্মী। মোতায়েন করা হয়েছিল ৬৫০ কোম্পানি বাহিনী।
বিধান্সভা নির্বাচনের মুখে ছত্তিশগঢ়ে দফায় দফায় মাওবাদী হানায় দূরদর্শনের এক আলোকচিত্রী, বিএসএফ-এর এক অফিসার–সহ কয়েকজনের মৃত্যুর ঘটনায় আতঙ্ক ছড়িয়েছিল সুকমা, বস্তার, রাজনন্দগাঁও, বিজাপুর, নারায়ণপুর, কোন্ডাগাঁও, কাঁকের, দান্তেওয়াড়া-এই সব মাওবাদী-উপদ্রত জেলা জুড়ে। তা সত্ত্বেও ভয়কে জয় করে ৭০ শতাংশ জনতা বুথে হাজির হয়েছেন। রাজ্যের বাকি ৭২ টি আসনে ভোট ২০ নভেম্বর।
আজ প্রথম দফার ভোট গ্রহণপর্ব শুরু হতে না হতেই মাও অধ্যুষিত ছত্তিশগড়ের কল্যাণকোটে ভোটকেন্দ্রের অদূরে আইইডি বিস্ফোরণ হয়৷ সুকমার বিজাপুরের বৈরামগড় থানার দয়ারাপাড়া ভোট কেন্দ্রের পাশ থেকে তিনটি আইইডি বিস্ফোরক উদ্ধার করে কেন্দ্রীয় বাহিনী। তার জেরে বুথে ভোট দিতে আসা ভোটারদের মধ্যে চাঞ্চল্য ছড়ায়৷ সিআরপিএফের বম্ব স্কোয়াডগুলি নিষ্ক্রিয় করার চেষ্টা শুরু করে৷ ভোট চলাকালীন বিজাপুরে মাওবাদীদের সঙ্গে দীর্ঘসময় ধরে নিরাপত্তা বাহিনীর গুলির লড়াই চলতে থাকে৷ সেনার গুলিতে খতম হয় পাঁচ মাওবাদীর৷ পালটা হামলায় গুরুতর আহত হন দুই কোবরা জওয়ান৷ পরে, ভোটগ্রহণ ব্যবস্থা সচল রাখতে শুরু হয় সেনা তল্লাশি৷ আকাশপথেও চলতে থাকে নজরদারি৷
নাশকতার আতঙ্ক উড়িয়ে সুকমা জেলার পালাম আদ্গুগ্রামে ১৫ বছর পরে প্রথম ভোট দিলেন ৪৪ জন গ্রামবাসী। সশস্ত্র মাওবাদ ছেড়ে মূলস্রোতে ফেরা নারায়ণপুরের দম্পতি মৈনুরাম-রাজবাত্তি ভোট দিয়েছেন। দান্তেওয়াড়ার গিদামের একটি বুথে ব্রেইলেরসাহায্যে ভোট দিয়েছেন এক দৃষ্টিহীন ভোটার। সুকমা জেলার ডোরনাপালে ১০০ বছরের এক বৃদ্ধাকে ভোট দানে সুবিধা করে দিতে তার বাড়িরকাছে বুথ তৈরি করেছে প্রশাসন। সেখানে গিয়ে ভোট দিয়েছেন তিনি। পাশাপাশি নজর কেড়েছে পিঙ্ক বুথ। রাজনন্দগাঁওয়ের কমলা কলেজে শুধু মেয়েদের জন্যই তৈরি ক্রা হয়েছিল পিঙ্ক বুথ’।
সব মিলিয়ে ছত্তিশগঢ়ের প্রথম দফার ভোটে বুলেটের বদলে রাজত্ব করল ব্যালট।