সারপ্রাইজ বোধহয় একেই বলে! শহরবাসীর জন্য ২৪ তম কলকাতা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবের প্রথম দিনেই অপেক্ষা করছিল চমক। রবিবার সকালে হঠাতই শহরে এসে পৌঁছলেন আলিয়া ভাট। পরিচালক সঞ্জয় নাগের ছবি ‘ইয়োর্স ট্রুলি’তে অভিনয় করেছেন আলিয়ার বাবা মহেশ ভাট ও মা সোনি রাজদান। নন্দন ১–এ স্পেশ্যাল স্ক্রিনিং বিভাগে ছবিটি দেখানো হয়। এই ছবির প্রচার করতে ও সাংবাদিক সম্মেলনে যোগ দিতেই শহরে হাজির আলিয়া।
কলকাতায় আগেও নিজের ছবির প্রচারে এসেছেন আলিয়া। কিন্তু নিজেই জানালেন, এবারের কলকাতা সফর তাঁর কাছে অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ। তাঁর কথায়, ‘যে ছবিতে স্বয়ং আমার বাবা-মা অভিনয় করেছেন, তার প্রচার করতে আসাটা আলাদা অনুভূতি। পরিচালক সঞ্জয়কে ধন্যবাদ এই ছবিতে একইসঙ্গে বাবা আর মা দু’জনকেই নির্বাচিত করার জন্য। ভবিষ্যতে যদি কোনও ছবিতে আমি, বাবা আর মা একসঙ্গে অভিনয়ের সুযোগ পাই তা হলে একটা ধমাকাদার ব্যাপার হবে।’
এবারে রেট্রোস্পেকটিভ বিভাগে দেখানো হবে ইরানের পরিচালক মাজিদ মাজিদির ৪টি ছবি। তাঁর সবচেয়ে বিতর্কিত ছবি ‘মহম্মদ: দ্য মেসেঞ্জার অফ গড’ দেখানো হল রবিবার নন্দন ১–এ। সম্প্রচারের শেষে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে মাজিদি বলেন, দেশে তালিবান এবং অন্যান্য চরমপন্থী সংগঠনগুলি একযোগে ইসলাম শব্দের অন্য অর্থ তৈরি করেছে! আমি আমার ধর্মের প্রকৃত স্বরূপকে বিশ্বের সামনে তুলে ধরতেই এই ছবিটা বানিয়েছি।
এ বছর প্রাচীন বাংলা ছবিগুলিকে সংরক্ষণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে ফিল্ম হেরিটেজ ফাউন্ডেশনের সহায়তায়। যার ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসাডার অমিতাভ বচ্চন। শুরু হতে চলেছে সংরক্ষণ বিষয়ে একটি ওয়ার্কশপ। রবীন্দ্র সদনে সেই ওয়ার্কশপের আনুষ্ঠানিক সূচনা করলেন জয়া বচ্চন। ছিলেন সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়, প্রসেনজিৎ, ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত, রঞ্জিত মল্লিক প্রমুখ। এরপর দেখানো হল সত্যাজিৎ রায়ের ‘অপু ট্রিলজি’। পাশাপাশি, কীভাবে সংরক্ষিত হল এই ছবিগুলি সে–বিষয়ে ১২ মিনিটের একটি তথ্যচিত্রও দেখানো হয় প্রদর্শন শুরুর আগে।
একইসঙ্গে গগনেন্দ্র প্রদর্শশালায় শুরু হল বাংলা সিনেমার ১০০ বছর পূর্তি উপলক্ষে বিভিন্ন ছবির পোস্টার ও সিনেমা স্টিলের প্রদর্শনী যার পোশাকি নাম দেওয়া হয়েছে ‘চালচিত্র’। এই প্রদর্শনীরও উদ্বোধন করেন জয়া বচ্চন। সঙ্গে ছিলেন সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়, প্রসেনজিৎ, রঞ্জিত মল্লিক, বিশ্বজিৎ, হরনাথ চক্রবর্তী, মন্ত্রী শশী পাঁজা প্রমুখ।
গতকাল বিকেলে সত্যজিৎ রায় শিশির মঞ্চে স্মারক বক্তৃতা দেন পরিচালক নন্দিতা দাস। বক্তব্যের শিরোনাম ছিল ‘মাই জার্নি উইথ মান্টো’। সম্প্রতি নন্দিতা পরিচালিত উর্দু লেখক সাদাত হাসান মান্টোর বায়োপিক ‘মান্টো’ মুক্তি পেয়েছে। নন্দিতা দাশের বক্তব্যে উঠে এল সেই ছবি তৈরির ইতিবৃত্ত।
এ বছর অস্ট্রেলীয় ছবিরও ১০০ বছর। সেই উপলক্ষে নন্দন ফয়ারে ‘হান্ড্রেড ইয়ার্স অফ অস্ট্রেলিয়ান সিনেমা’ শীর্ষক একটি প্রদর্শনীর উদ্বোধন করলেন ভারতে নিযুক্ত অস্ট্রেলিয়ার হাই কমিশনার হরিন্দর সিধু। আবার, আগামী বুধবার বিভাস মুখোপাধ্যায়ের সম্পাদনায় প্রকাশিত হবে একটি বই ‘চলচ্চিত্রচর্চা: প্রসঙ্গ বার্গম্যান’। উৎসবের একতারা মুক্তমঞ্চে বইটির আনুষ্ঠানিক প্রকাশ করবেন গৌতম ঘোষ ও প্রসেনজিৎ।