ফেসবুকে দেখলাম একজন জনৈক পরিচালকের খুব গাত্রদাহ হয়েছে কারণ ফিল্ম ফেস্টিভ্যালে মুখ্যমন্ত্রীর অনেক হোর্ডিং ছিল। উনি নন্দনে সিনেমা দেখতে গেছিলেন না হোর্ডিং, সেই তর্কে না গিয়ে বলি, ঢেঁকি স্বর্গে গিয়েও ধান ভাঙে। আর বুদ্ধজীবিরা… থাক সে কথা।
বুদ্ধবাবুর আমলে কি রকম ফেস্টিভ্যাল হত, ভুলে গেলেন? নন্দন – সংস্কৃতির পীঠস্থান – সেখানে পাসের জন্য রীতিমত মারামারির উপক্রম। বিউরোক্রাটদের দাদাগিরি। সিনেমা চলাকালীন যান্ত্রিক গোলযোগ, পাওয়ার কাট। শিডিউলে থাকা সত্ত্বেও সিনেমা দেখানো হল না। জনৈক উবাচ – লিস্টে থাকলেই সব সিনেমা দেখাতে হবে, কে বলল?
আর মাননীয় ব্যক্তি স্বাধীনতার ধামাধারীরা, মনে নেই ২০০৭? মুখ্যমন্ত্রী নন্দনে সিনেমা দেখছেন, পাচ্ছে তার ব্যাঘাত না ঘটে, তাই ঋতুপর্ণ ঘোষ, অপর্ণা সেনদের নন্দন চত্বরে হেনস্থা, গ্রেপ্তারি? যখন ‘অশ্লীলতার’ দোহাই দিয়ে কৌশিক গাঙ্গুলীর ‘আরেকটি প্রেমের গল্প’ নন্দনে দেখানো হল না, সে বেলা?
এখনকার মুখ্যমন্ত্রী দাবি করেন না যে তিনি সিনেমাবোদ্ধা। তিনি শুধু আন্তরিকতা দিয়ে একটা ফেস্টিভ্যালকে সারা বিশ্বের কাছে অতিস্বরণীয় করে তুলতে চান। জনৈক পরিচালক বলেছেন, কলকাতা ছাড়া অন্য কোনও ফেস্টিভ্যালে মুখ্যমন্ত্রীর ছবি থাকে না। তাঁকে মনে করিয়ে দিতে চাই, সারা বিশ্বে একমাত্র কলকাতা ফেস্টিভ্যালই সরকারি পৃষ্ঠপোষকতায় হয়।
নিজের পছন্দের লোক ক্ষমতায় নেই বলে কেন নিজের শহরটাকে ছোট করছেন? কলকাতাকে ভালোবেসে, সিনেমাকে ভালোবেসে এই কদিন অন্তত নিজের বুদ্ধজীবী পরিচয়টা সরিয়ে রাখা যায় না?