বিজেপির কাছে এখন রাজস্থান কঠিন ঠাই। প্রথমত, কংগ্রেসের কাছে বড় ব্যবধানে হারের ইঙ্গিত দিচ্ছে জনমত সমীক্ষাগুলি। দ্বিতীয়ত, রাজস্থান বিধানসভা নির্বাচনের বৈশিষ্টই হল, পাঁচ বছর অন্তর সরকার বদল। মোদী বুঝে গিয়েছেন, এই চোরাবালি পার করা প্রায় অসম্ভব। তাই হার নিশ্চিত বুঝে প্রচারে দায়সারা প্রধানমন্ত্রী হাঁটুজলের বেশি নামছেন না।
কৌশলী নরেন্দ্র মোদী ভোট বাজারের বিপণন বোঝেন খুব ভালো। কীভাবে ব্র্যাণ্ড মোদীকে প্রতিষ্ঠা করতে হয় সেটা তাঁর নখদর্পনে। কিন্তু অক্টোবরের ৮ তারিখে আজমেরে বিজয় সংকল্প সভায় গিয়েই কৌশলী মোদী বুঝে গিয়েছিলেন, রাজস্থানে হার প্রায় নিশ্চিত। মুখ্যমন্ত্রী বসুন্ধরা রাজে দাবি করেছিলেন, ওই সভায় ৩ লাখ লোক হবে। বাস্তবে সামনের চেয়ারগুলোও ভরেনি।
রাজস্থানবাসী বিজেপিকে প্রত্যাখ্যান করা শুরু করেছিল কয়েক মাস আগে থেকেই। ফেব্রুয়ারি মাসের উপনির্বাচনে আলোয়ার এবং আজমেড় লোকসভা কেন্দ্র এবং মণ্ডলগড় বিধানসভা কেন্দ্রের ৩ টি আসনেই গোহারান হারে বিজেপি। বিজেপিকে যে রাজস্থানবাসী তখনই বাতিল করেছে এটা ছিল তার ‘শুরুয়াতি’ ইঙ্গিত।
এরপর একের পর এক জনমত সমীক্ষায় বিজেপির হারের পূর্বাভাস মিলেছে। বিজেপি সূত্রের বক্তব্য, ছত্তীসগঢ়ে এখন পর্যন্ত ৬টি জনসভার পরিকল্পনা হয়ে গেলেও রাজস্থানে এখনও কোনও জনসভার পরিকল্পনাই করা হয়নি। বিজেপি নেতারা অবশ্য প্রকাশ্যে বলছেন ভোটের এখনও দেরি আছে। তবে দলীয় সূত্রের মতে, বসুন্ধরা রাজের সঙ্গে মোদী এবং অমিত শাহ দু’জনেরই দূরত্ব সুবিদিত। সম্প্রতি রাজস্থানের কিছু জেলায় ‘বসুন্ধরা বিদায় নিন, মোদী আসুন’ পোস্টারও পড়ে। যা দেখে ক্ষুব্ধ বসুন্ধরা ঘনিষ্ঠ মহলে তাঁর বিরুদ্ধে চক্রান্ত করার অভিযোগ করেছিলেন। আসলে পাঁচ রাজ্যের বিধানসভা ভোটকে জল মাপার কাজে লাগাতে চাইছেন তিনি। কারণ, এর পরেই লোকসভা ভোটের মেগা প্রচার আছে। তাই নিজেকে এখনই পুরো খরচ করতে চাইছেন না মোদী। এসব দেখে হতাশ মুখ্যমন্ত্রী বসুন্ধরা রাজে। তাঁর কথায়, এমন বিপদের সময়েই সামনে থেকে বুক চিতিয়ে লড়া উচিৎ দলের শীর্ষ নেতাদের। কিন্তু রাজস্থানের হারা মাঠে সময় নষ্ট করার পক্ষপাতী নন মোদী।