বিজেপির মতাদর্শ ও সংস্কৃতি থেকে দূরে থেকে সমান্তরাল ভাবে দল করতে চাইছেন মুকুল রায়। বর্ষীয়ান রাজনীতিবিদের উদ্দেশ্যে এমনই অভিযোগ তুললেন রাজ্য বিজেপির একাংশ। পাশপাশি লোকসভা ভোটের প্রস্তুতি পর্বে দলের রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ এবং নির্বাচনী কমিটির আহ্বায়ক মুকুল রায়ের মধ্যে সমঝোতার অভাবও চোখে পড়ছে দলীয় কর্মীদের। বিভিন্ন বিষয়ে মতপার্থক্য প্রকাশ্যে আসছে। এমনকি মুকুলের সঙ্গীরা তাঁর ‘অনুগামী’ হয়েই থেকে যাচ্ছেন, বিজেপির মূল স্রোতে মিশছেন না, এমন অভিযোগও উঠেছে। সব মিলিয়ে বিজেপির ভেতরে যে গোষ্ঠী দ্বন্দ্ব চলছে সেটা স্পষ্ট।
এই নিয়ে প্রশ্নের জবাবে বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ বলেন, ‘অন্য দল থেকে এসে বিজেপির মতাদর্শ এবং সংস্কৃতি শিখে পদাধিকারী এবং মন্ত্রী হয়েছেন – এমন দৃষ্টান্ত গোটা দেশে প্রচুর আছে। কিন্তু কেউ যদি বিজেপির মতাদর্শ এবং সংস্কৃতি থেকে দূরে থেকে সমান্তরাল ভাবে দল করতে চান, তা হলে তিনি দলের মূল স্রোতে মিশবেন না! তবে সকলেরই মনে রাখা উচিত, বিজেপিতে কেউ কোনও ব্যক্তির অনুগামী হয় না। দলের অনুগামী হয়’।
বিভিন্ন বিষয়ে কীরকম মতপার্থক্য হচ্ছে দিলীপ-মুকুলে? বিজেপি সূত্রের খবর, রাজ্যের ৪২টি লোকসভা কেন্দ্রের প্রতিটি সম্পর্কে ‘তথ্যভাণ্ডার’ তৈরি করছেন মুকুলবাবু। কিন্তু দিলীপবাবুরা মনে করছেন, ওই ‘তথ্যভাণ্ডার’ অপ্রয়োজনীয়। প্রতি জেলায় নির্বাচনী কমিটি তৈরির যে প্রচেষ্টা মুকুলবাবু শুরু করেছেন, মতভেদ দেখা দিয়েছে তা নিয়েও। রাজ্য সভাপতি দিলীপের মতে, ‘ন্য কেন্দ্রপিছু তথ্যভাণ্ডার অনেক আগে তৈরি করে ফেলেছেন। এখন আর নতুন করে সেটা করার প্রয়োজন নেই। আর জেলা স্তরে নির্বাচনী কমিটি তৈরির কোনও রীতি আমাদের দলে নেই। আমাদের স্থায়ী নির্বাচনী কমিটি আছেই। মুকুলবাবুকে শুধু সেখানে সংযোজকের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে’। সব মিলিয়ে লোকসভা ভোটের আগে গোষ্ঠী দ্বন্দ্ব আর মতানৈক্যে জেরবার রাজ্য বিজেপি।