কবি বলেছেন – ‘যেখানে দেখিবে ছাই, উড়াইয়া দেখো তাই/ পাইলেও পাইতে পারো অমূল্য রতন।’ এ যে কত দামী কথা, তা আবারও প্রমাণ করে দিলেন বিজেপি নেতা জনার্দন রেড্ডি।
বাইরে ঝকঝকে মসৃণ দেওয়াল। কিন্তু তার আড়ালেই গোপন সিন্দুক। ভেতরে টাকার বান্ডিল, আয়করের খাতায় যার কোনও হিসেব নেই। তবে শেষমেশ সেই কালো টাকার হদিশ পেল সিবিআই।
প্রতারণার মামলায় নাম জড়িয়েছিল বিজেপির এই প্রাক্তন মন্ত্রী তথা মাইনিং ব্যারনের। তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠে, আর্থিক তছরুপের মামলা থেকে রেহাই দেওয়ার জন্য অ্যাম্বিডেন্ট প্রাইভেট লিমিটেড নামের একটি বেসরকারি সংস্থার থেকে রেড্ডি প্রায় ২০ কোটি টাকা নিয়েছিলেন। এই অভিযোগের প্রেক্ষিতেই বেঙ্গালুরুতে রেড্ডির সম্পত্তির খোঁজে তল্লাশি চালায় সিবিআই।
ঘটনা প্রসঙ্গে বেঙ্গালুরুর পুলিশ কমিশনার টি সুনীল কুমার জানিয়েছেন, জনার্দন রেড্ডি ও তাঁর ঘনিষ্ঠ আলি খানের খোঁজে তল্লাশি শুরু করা হয়েছে। সেই ২০ কোটি টাকার চুক্তিতে মধ্যস্থতা করেছিলেন ব্যবসায়ী আলি খানই। অ্যাম্বিডেন্ট নামে একটি আর্থিক সংস্থার বিরুদ্ধে প্রতারণা মামলার তদন্ত করতে গিয়ে রেড্ডির ভূমিকা নজরে আসে সিবিআইয়ের।
তিনি আরও জানিয়েছেন যে, পঞ্জি (Ponzi) স্কিমের মাধ্যমে ১৫ হাজারের বেশি মানুষের কাছ থেকে ৬০০ কোটিরও বেশি টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে ওই সংস্থার বিরুদ্ধে। বিনিয়োগে ৪০ শতাংশ পর্যন্ত সুদ দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল ওই সংস্থা।
তদন্তে নেমে সিবিআই জানতে পারে, অ্যাম্বিডেন্টের প্রতিষ্ঠাতা সৈয়দ আহমেদ ফরিদকে সাহায্য করেছেন বিজেপির প্রাক্তন মন্ত্রী। ওই সংস্থার বিরুদ্ধে ইডির দায়ের করা আর্থিক তছরুপের মামলা তুলতে ফরিদকে সাহায্যের জন্য ২০ কোটি টাকা চান রেড্ডি। সেইমতো ২০ কোটি টাকার সোনা দেওয়া হয় তাঁকে। কর্ণাটকের বেল্লারিতে এক সোনা ব্যবসায়ীর মাধ্যমে ওই সোনা লেনদেন করা হয়।
রমেশ নামে বেল্লারির ওই সোনা ব্যবসায়ীকে আগেই গ্রেফতার করা হয়েছে। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, অম্বিকা সেলস কর্পোরেশন নামে একটি সংস্থার থেকে ১৮ কোটি টাকায় ৫৭ কেজি সোনা কেনার পর তা রমেশকে দেয় অ্যাম্বিডেন্ট।
ঘটনা নিয়ে এখনও মুখ খোলেননি কোনও বিজেপি নেতাই। মুখে কুলুপ এঁটেছেন খোদ মোদীও। তবে লোকসভা ভোটের আগে বিজেপির অস্বস্তি যে আরও খানিকটা বাড়িয়ে দিলেন রেড্ডি, সে কথাই বলাই বাহুল্য।