নোটবন্দী নিয়ে শুধু বিরোধীদের নয়, বিদ্বজ্জনদেরও তোপের মুখে পড়েছে মোদী সরকার। নোটবন্দীর সমালোচনায় মুখর হয়েছেন অর্থনীতিবিদ কৌশিক বসু থেকে ইতিহাসবিদ রামচন্দ্র গুহ, হাবিব ইরফানের মতো বিশিষ্টজনেরা। তাৎপর্যপূর্ণভাবে মোদী সরকারের সিদ্ধান্তের পক্ষে সওয়াল করতে কোনও বিদ্বজ্জনকে এগিয়ে আসতে দেখা যায়নি। বিজেপি মুখপাত্ররাই গলা ফাটিয়ে গেছেন সারা দিন।
নোটবন্দির অব্যবহিত পরে নরেন্দ্র মোদী সরকারের ওই সিদ্ধান্তের সমালোচনা করে নিউ ইয়র্ক টাইমসের উত্তর সম্পাদকীয়তে কৌশিক বসু যে নিবন্ধ লিখেছিলেন, নোটবন্দির দ্বিতীয় বার্ষিকীতে সেই নিবন্ধই ফের টুইট করেছেন তিনি। বিশ্বব্যাঙ্কের প্রাক্তন এই মুখ্য অর্থনীতিবিদের কটাক্ষ, ‘ওই নিবন্ধে বলেছিলাম, নোটবন্দি দেশের মধ্যবিত্ত ও নিম্নবিত্ত মানুষের কাছে ভয়াবহ হবে। কৃষকরা ক্ষতিগ্রস্ত হবে। দুর্ভাগ্যজনক হলেও আমার সেই বিশ্লেষণ সঠিক প্রতিপন্ন হয়েছে।’
নোটবন্দির সময়ের একটি ছবি রিটুইট করেছেন ইতিহাসবিদ রামচন্দ্র গুহ। সেটা গুরুগ্রামের একটি ব্যাঙ্কে গ্রাহকদের লাইনের ছবি। লাইনে দাঁড়িয়ে কাঁদছেন এক বৃদ্ধ। সেই ক্রন্দনরত বৃদ্ধের ছবি নোটবন্দির পরবর্তী সময়ে আমজনতার দুর্দশার প্রতীক হয়ে উঠেছিল বলে মন্তব্য করেছেন রামচন্দ্র। সেই টুইট পাঁচশোরও বেশি মানুষ রিটুইট করেছেন।
নোটবন্দির সাফল্যের পক্ষে কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি বৃহস্পতিবার ফের আয়কর রিটার্নের সংখ্যা-বৃদ্ধির যুক্তি তুলে ধরেছেন। ইতিহাসবিদ ইরফান হাবিবের টুইট সেই যুক্তিও খণ্ডন করেছে। ২০১২-১৩ অর্থবর্ষ থেকে ২০১৭-১৮ অর্থবর্ষের আয়কর রিটার্নের চিত্র তুলে ধরে তিনি দেখিয়েছেন, ইউপিএ-২ সরকারের শেষ দুই বছরে আয়কর রিটার্নের বৃদ্ধি ছিল ৩১ ও ৩৮ শতাংশ। বরং মোদী জমানায় ২০১৬-১৭ এবং ২০১৭-১৮ অর্থবর্ষে এই বৃদ্ধি মোটে ২২ এবং ২৬ শতাংশ।
উল্টে নোটবন্দীর ‘ইতিবাচক’ দিক তুলে ধরতে গিয়ে সমালোচনার মুখে পড়েন দেশের প্রাক্তন মুখ্য আর্থিক উপদেষ্টা, আইএমএফে কাজ করা হার্ভাডের প্রখ্যাত অর্থনীতিবিদ অরবিন্দ ভিরমানি। শেষে তিনি টুইটে ঘোষণা করেন, তিনি কখনও নোটবন্দির সমর্থক ছিলেন না। তাঁর কথায়, ‘আমি নোটবন্দির প্রস্তাবক, সমর্থক বা উৎসাহদাতা ছিলাম না। শুধু নোটবন্দির অর্থনৈতিক প্রভাবের ইতিবাচক ও নেতিবাচক দিক তুলে ধরেছিলাম।