‘আমার কালো মেয়ে রাগ করেছে’, ‘জগৎ জননী শ্যামা’, ‘ অন্তুরে তুমি আছ চিরদিন’, ‘ওগো অন্তর্যামী’, ‘আমার কালো মেয়ের পায়ের তলায় দেখে যা আলোর নাচন’, ‘মহাবিদ্যা আদ্যাশক্তি পরমেশ্বরী কালিকা’, ‘শ্মশানে জাগিছে শ্যামা’, ‘বল রে জবা বল’ – পাঠক আজ এ কথা সবাই জানে এই সমস্ত গান রচনা করেছিলেন বিংশ শতাধীর প্রথমার্ধে কাজী নজরুল ইসলাম । সত্যি কী এই বদলে যাওয়া জাতিদাঙ্গায় দীর্ণ ভারত নামের উপমহাদেশে তিনি জন্মালে এই সঙ্গীত রচনা করার সুযোগ পেতেন ৷ তাঁর বাসগৃহে গিয়ে কোনও গৈরিক ধর্মান্ধরা তাকে কি একবারের জন্যেও শাসিয়ে আসত না ? যে কেন একজন মুসলমান হিসেবে আপনি শ্যামা সঙ্গীত রচনা করছেন?
১৯৫২ সালে ‘বৈজু বাওরা’ নামে একটি চলচ্চিত্র নির্মিত হয়েছিল। যার সঙ্গীতকার ছিলেন একজন মুসলমান — নৌশাদ। যার গীতিকার ছিলেন একজন মুসলমান — শাকিল বদায়ুনি । যার গায়ক ছিলেন — মোহম্মদ রফি । গোটা সিনেমার সমস্ত গানই ভগবান শ্রী বিষ্ণু ও ভগবান হরিকে ঘিরে। ২০১৮-তে আদৌ কী এরা সুযোগ পেতেন এই সিনেমায় হিন্দুদের উপাস্য কোনও দেবতাদের নিয়ে সঙ্গীত তৈরি করতে। বোধ হয় নয়। এই ২০১৮ শ্যমো পূজা ও দীপাবলির উৎসবের মুখে দাঁড়িয়ে এ প্রশ্নই জেগে ওঠে তবে কি হিন্দুদের উপাস্য কোনও দেবতাদের গান হিন্দুরাই রচনা করবে এবং গাইবে।’ তবে কি আর কোনও নজরুল ইসলাম তৈরি করবেন না কোনও শ্যামা সঙ্গীত ? আমরা সম্ভবত ভুলে যাই অথবা কোনও এক গৈরিক চক্রান্ত আমাদের ভুলিয়ে দেয় – ‘ মোরা একই বৃস্তে দুটি কুসুম হিন্দু-মুসলমান’।