কেন্দ্রীয় সরকার রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়ার কাছে মোট মূলধনের এক তৃতীয়াংশ সরকারি কোষাগারে জমা করার জন্য ‘আর্জি’ জানিয়েছিল। সরকারি আর্জিতে সরাসরি ‘না’ বলে দেওয়ার জন্যই মোদি সরকার ও আরবিআইয়ের মধ্যে সঙ্ঘাত শুরু হয়েছে। ফলে শঙ্কায় দেশের আর্থিক ভারসাম্য। এমনই দাবি জানাল একটি সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম।
ওয়াকিবহাল মহলের প্রশ্ন, এর আগে কেন্দ্রীয় সরকার রিজার্ভ ব্যাঙ্কের গচ্ছিত সম্পদে হাত বসিয়েছিল ভারত–চীন যুদ্ধের সময়। জরুরি অবস্থায় তখন আর কোনও উপায় সরকারের কাছে ছিল না। কিন্তু এখন কী এমন জরুরি অবস্থা তৈরি হল যে কেন্দ্রীয় সরকারকে আরবিআইয়ের কাছে টাকা চাইতে হচ্ছে?
ওই সংবাদমাধ্যমটির দাবি, রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কগুলির ব্যবসা সম্প্রসারণের জন্য রিজার্ভ ব্যাঙ্কের মূলধন থেকে ৩ লক্ষ ৬০ হাজার কোটি টাকা অনুদান হিসেবে চেয়েছিল কেন্দ্র। সংসদে পেশ করা তথ্যানুযায়ী এই মুহূর্তে রিজার্ভ ব্যাঙ্কের মোট সঞ্চয়ের পরিমাণ ৯.৫৯ লক্ষ কোটি টাকা। অর্থ মন্ত্রকের বক্তব্য, রিজার্ভ ব্যাঙ্ক যদি মোট সঞ্চয়ের এক–তৃতীয়াংশ রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কগুলির স্বাস্থ্য ফেরানোর জন্য দেয়, তা হলে আরও বেশি সংখ্যক নাগরিককে আরও বেশি পরিমাণে ঋণ দিতে পারবে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কগুলি। তাতে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কগুলির ব্যবসা সম্প্রসারণে সুবিধা হবে।
কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রকের আর্জিতে ‘না’ বলতে গিয়ে আরবিআই-এর তরফে যুক্তি দেওয়া হয়েছে, কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্কের ‘লক্ষ্মীর ভাঁড়ার’ ভেঙে তা বাজারে ছড়িয়ে দেওয়া হলে, তা আরবিআই ও সরকার, দু’য়েরই বিশ্বাসযোগ্যতা কমিয়ে দেয়। এতে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কগুলির ব্যবসা বাড়ানোর জন্য সরকারের যে কোনও সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা বা অর্থবরাদ্দ নেই, সেটাও প্রমাণিত হচ্ছে। এতেই সরকার আর শীর্ষ ব্যাঙ্কের মধ্যে বেঁধেছে বিরোধ।
এই ঘটনা নিয়েই মুখ খুলেছেন আরবিআইয়ের প্রাক্তন গভর্নর রঘুরাম রাজন। এক টেলিভিশন সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ‘সরকারের কোনও প্রস্তাবে না বলার স্বাধীনতা বিজার্ভ ব্যাঙ্কের থাকা উচিত’।