আতসবাজি নিয়ে রায় দিয়ে দিয়েছে স্বয়ং সুপ্রিম কোর্ট। দূষণের হাত থেকে পরিবেশকে বাঁচাতে রংমশাল, তুবড়ির উপরে কোপ পড়তে পারে। এই আশঙ্কা থেকেই বাজি ছেড়ে এবার বাংলার সাবেকি ফানুসকেই হাতিয়ার করতে চান বাজি ব্যবসায়ীরা।
কালীপুজোর আগের দিন টালা পার্কের বাজি বাজারে গিয়ে এ কথাই শোনা গেল। বাজার কমিটির সম্পাদক শুভঙ্কর মান্না বলছেন, ‘সাবেকি ফানুস তৈরি করেন এমন এক জন রবিবারই বাজারে এসে কারিকুরি দেখিয়েছেন। এই ফানুস আগামী দিনে বাজির বিকল্প হতে পারে।’
গত কয়েক বছর ধরেই ফানুস নিয়ে অবশ্য একটি হুজুগ রয়েছে। তবে সেই ফানুসকে বাঙালির সাবেকি ফানুস বলা চলে না। বরং প্যাকেটের উপরে হিজিবিজি চিনে হরফ থাকায় লোকমুখে তার পরিচিতি চিনে ফানুস হিসেবেই। ছোট মাপের ওই ‘চিনে’ ফানুস নিয়ে অভিযোগও কম নেই। নিয়ম মেনে তৈরি না হওয়ায় আকাশে ওঠার পরে জ্বলন্ত অবস্থায় এ দিক-সে দিক আছড়ে গিয়ে পড়ে।
সাবেকি ফানুসে সে সব সমস্যা নেই বলেই দাবি করছেন শুভঙ্করবাবু। তাঁর কথায়, ‘সাবেকি ফানুস অনেক জ্যামিতিক নিয়ম মেনে তৈরি হয়। ফলে তা নির্দিষ্ট গতিপথ মেনে ওড়ে এবং তা এলোমেলো ভাবে আছড়ে পড়ে না।’
দীর্ঘদিন ধরে ফানুস তৈরি করছেন বেলগাছিয়ার দেবাশিস মুখোপাধ্যায়। তিনি জানান, ‘সাবেকি ফানুস আকাশের অনেক উপরে উঠে যায়। ফলে বিপদের আশঙ্কা কার্যত নেই বললেই চলে।
বাজির দূষণ নিয়ে দীর্ঘ দিন ধরেই সরব ছিলেন পরিবেশকর্মীরা। এ বার সেই আপত্তিতে সিলমোহর দিয়েছে সুপ্রিম কোর্টও। বাজির বিভিন্ন দূষিত মশলায় নিষেধাজ্ঞা জারির পাশাপাশি দেশের সব জায়গায় বাজি পোড়ানোর সময়ও বেঁধে দিয়েছে শীর্ষ আদালত। বাজির দূষণের কথা মেনে নিচ্ছেন ব্যবসায়ীদের একাংশও। ফলে এবারের আলোর উৎসবে যে বিভিন্নরকম বাজির বদলে ফানুসের পাল্লাই ভারী থাকবে, সে কথা বলাই বাহুল্য।