বাংলার মুকুটে যোগ গল নতুন পালক। খুলে গেল দক্ষিণেশ্বর স্কাইওয়াক। আজ মঙ্গলবার এই স্কাইওয়াকের উদ্বোধন করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ফেরি, ট্রেন, প্রস্তাবিত মেট্রো, তিন পথেই যুক্ত ঝাঁ-চকচকে আকাশপথ। আগামীকাল অর্থাৎ মঙ্গলবার থেকেই সাধারণ মানুষের জন্য খুলে দেওয়া হবে স্কাইওয়াক।
৬০ কোটি টাকা খরচে গড়ে ওঠা এই স্কাইওয়াক লম্বায় ৩৮০ মিটার, চওড়ায় ১০ মিটার। অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা থেকে সিসিটিভি ছাড়াও রয়েছে ১২টি চলমান সিঁড়ি, ৮টি সিঁড়ি এবং ৪টি লিফট। স্কাইওয়াক সাজানো হয়েছে থ্রিডি আলোকসজ্জায়।
দক্ষিণেশ্বরে স্কাইওয়াকের উদ্বোধন করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘স্কাইওয়াক তৈরি অনেকেই চায়নি৷ আগে কেউ এনিয়ে ভাবেনি৷ তিনটি দল অনেকভাবে আটকেছে৷ হকারদের ভুল বোঝানো হয়েছিল৷ অনেক লড়াই করে স্কাইওয়াক হল’৷
দক্ষিণেশ্বরের ভবতারিণীর মন্দিরেই রামকৃষ্ণ পরমহংস বলেছিলেন, ‘যত মত তত পথ’। সেই রামকৃষ্ণদেবের লীলাক্ষেত্রে দাঁড়িয়েই বিজেপিকে ‘হিন্দুত্বে’র পাঠ দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর কথায়,’হিন্দু, মুসলিম, শিখ ও খৃষ্ট্রানের মধ্যে ভাগাভাগি করছে ওরা। গেরুয়া পরলেই কেউ সাধু হন না। মনটাও সাধুর মতো হওয়া চাই।’
বিজেপিকে কটাক্ষ করে মমতা বলেন, ‘২০-২৫ বছরে হিন্দু ধর্ম শেখাচ্ছে। বেদবেদান্ত যখন তৈরি হয়েছিল, তখন জন্মেছিল? এরা খায়, দায় ঘুরে বেড়ায়। আর ভাষণ দেয়। আসল সাধুসন্ত পাহাড়ে থেকে বনে থেকে তপস্যা করেন। লোভ করেন না। এরা এনজয় করে বেড়াবে আবার গেরুয়া পরবে। একটা সত্যি গেরুয়া আর একটা ঝুটা গেরুয়া।’
সম্প্রীতির নজিরও তুলে ধরেন মুখ্যমন্ত্রী। বলেন,’বেলুড়মঠের মধ্যে রয়েছে মাজার। এটা মাথায় রাখতে হবে। রামকৃষ্ণ বলতেন, ওরে মা মানে তো মা। কেউ মা বলে, কেউ আম্মা’। বাংলার মানুষ বিভেদের রাজনীতিতে পা দেবেন না, তাও মনে করিয়ে দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। বলেন, ‘আমরা ভাগাভাগি করি না। বাবা-মায়েরা এটা শেখায়নি।’
রাজনৈতিক মহলের মতে, বিজেপিকে হিন্দুত্বের পাঠ দিতে দক্ষিণেশ্বরের মঞ্চ বেছে নেওয়াটা মমতার মাস্ট্রারস্ট্রোক। কারণ, গোটা পৃথিবীর পর্যটকদের নজর থাকে দক্ষিণেশ্বরের মন্দিরে। এখানে স্কাইওয়াক নির্মাণ করে যেমন রাজ্যবাসীর কষ্ট লাঘব করার সঙ্গে দেশ-বিদেশের পর্যযটকদেরও বার্তা দিলেন মুখ্যমন্ত্রী। পাশাপাশি হিন্দুত্বের কথা বলে বিজেপির পালের হাওয়া কেড়ে নিলেন মমতা। অর্থাৎ এক ঢিলে দুই পাখি মারলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী।