‘যে মারধর করে লোক তাড়াচ্ছে, সে আচ্ছে দিন আনবে কী করে? ‘সবসে বুড়া’ দিন চলছে এখন। পেট্রল-ডিজেলের দাম বাড়ছে, মানুষের নাভিশ্বাস উঠছে। এটাই কি আচ্ছে দিন? দেশে প্রকৃত ‘আচ্ছে দিন’ আনার দায়িত্ব বাংলাকেই নিতে হবে’। চা-বাগান আর বনবস্তি অধ্যুষিত ডুয়ার্সের হিন্দিভাষী মানুষের একটা বড় অংশ বুধবার চালসার টিয়াবন ময়দানে সরকারি পরিষেবা প্রদান অনুষ্ঠানে এভাবেই নরেন্দ্র মোদীর ‘আচ্ছে দিন’কে কটাক্ষ করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
অনুষ্ঠানে ক্ষুব্ধ মমতা প্রশ্ন তোলেন, ‘দলিত-আদিবাসীদের উপর অত্যাচার করে আচ্ছে দিন, মা-বোনদের মর্যাদা নষ্ট করে আচ্ছে দিন, মানুষকে পিটিয়ে মেরে আচ্ছে দিন? এভাবে আচ্ছে দিন আসে না, আসবেও না। দেশকে বিক্রি করে আচ্ছে দিন আসবে না। গত চার বছরে এরা গোটা দেশের হাল খারাপ করে দিয়েছে, এটা কি আচ্ছে দিন’?
এর উত্তরও দিয়েছেন মমতা। বলেন, ‘ বাংলা কোনও পদের জন্য লালায়িত নয়। দেশকে এক রাখার জন্য বাংলা লড়বে। দেশ আর দেশের মানুষকে ভালো রাখলে, তবেই আসবে আচ্ছে দিন। গরিব আর অসহায় মানুষের মুখে দু’বেলা দু’মুঠো ভাত তুলে দিতে, হবে। মমতার কথায়, ‘বাংলা সেটা পারে, তাই এখানে দু’টাকা কিলো দরে চাল-গম মেলে। চা-বাগান শ্রমিকরা ৪৭ পয়সা কেজি দরে চাল পান। বাগান বন্ধ থাকলে ১৫০০ টাকা করে ভাতা পান। কন্যাশ্রী হয়, সবুজশ্রী হয়, সবুজসাথী হয়, স্কুলে বই মেলে, মেলে ব্যাগ-জুতোও। এটাই আচ্ছে দিনের মডেল। সেই ‘আচ্ছে দিন’ ফেরাতে আগামীর জন্য তৈরি থাকতে হবে আমাদের সবাইকে’।
তৃণমূল সরকার যে মা-মাটি-মানুষের জন্যই দায়বদ্ধ, সে কথা ফের মনে করিয়ে দিয়ে জনপ্রতিনিধি এবং সরকারি আধিকারিকদের নিদানও দেন মুখ্যমন্ত্রী। পঞ্চায়েত থেকে বিধানসভা আর লোকসভা, সব স্তরের জনপ্রতিনিধিদের মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ, ‘মানুষ বিপদে পড়লে পাশে দাঁড়ান। অসহায় মানুষ যেন আপনাদের খুঁজে না বেড়ায়। আপনারা তাঁদের খুঁজে বের করুন। এটাই আমাদের দিশা, সরকারের কাজের অভিমুখ’। সরকারি আধিকারিকদের জন্য তাঁর নিদান – ‘মানুষের কাজ নির্দিষ্ট সময়ে করুন। সরকারি সব সুযোগ-সুবিধা যেন বাংলার প্রতিটি ঘরে পৌঁছয়। এখন ডিজিটাল রেশন কার্ড হয়েছে। সবার বাড়িতে পৌঁছে দিন। যাঁদের এখনও হয়নি, তা দ্রুত শেষ করার ব্যবস্থা করুন। আপনাদের সবার একটাই স্লোগান হোক – সব কাজ হবে বিফোর টাইমে, আফটার টাইমে নয়’।