ভোট বৈতরণী পেরতে শেষমেশ কংগ্রেসের লেজুড় হল বামেরা। নির্বাচনে জিততে পুঁজিপতি বুর্জোয়া দল কংগ্রেসেরই দ্বারস্থ হলেন সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্র। লোকসভা ভোটে সরাসরি কংগ্রেসকে সমর্থনের কথা ঘোষণা করে দিলেন তিনি। এমনকি যেখানে বামেরা দুর্বল সেখানে কংগ্রেসকে ভোট দেবার আহ্বানও জানিয়েছেন সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক।
সম্প্রতি সিবিআইয়ের অন্দরে চলা ডামাডোলের প্রতিবাদে বিধাননগরে সিজিও কমপ্লেক্সের সামনে অবস্থান বিক্ষোভ কর্মসূচী নিয়েছিল উত্তর ২৪ পরগনা সিপিএম। সেখানেই উপস্থিত হয়ে সূর্যকান্ত বলেন, ‘বিজেপিকে হারাতে এবং দিল্লীতে ধর্মনিরপেক্ষ ও গণতান্ত্রিক বিকল্প সরকার গড়ার লক্ষ্যে আমরা কংগ্রেসকে সমর্থন জানাব। যেখানে আমাদের শক্তি সেখানে আমরা নিজেরা লড়াই করব। যেখানে আমরা দুর্বল সেখানে বিজেপিকে হারাতে কংগ্রেস যদি বিকল্প হয়, তাহলে কংগ্রেসকে ভোট দিতে হবে’। এমনকি যে লোকসভা আসনগুলিতে বামেরা দুর্বল, সেগুলি কংগ্রেসকে ছেড়ে দেওয়ার বার্তাও দিয়েছেন সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক। এখানেই শেষ নয়, রাহুল গান্ধীর স্লোগান ‘গলি গলি মে শোর হ্যায়, দেশ কা চৌকিদার চোর হ্যায়’ও শোনা গেছে সূর্যের গলায়।
সিপিএমের রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের মতে, সূর্যের এমন ঘোষণা বামেদের সাংগঠনিকভাবে দেউলিয়া হয়ে যাওয়াই প্রমাণ করছে। তবে তাঁদের অবাক করছে বামেদের এমন হাল ছেড়ে দেওয়া মনোভাব। একার শক্তিতে তৃণমূলকে আটাকাতে পারবে না সেটা বুঝেই কংগ্রেসের হাত ধরতে এমন আকুল আহ্বান জানিয়েছে বামেরা। একই সঙ্গে বামেদের বিরুদ্ধে বৈপরীত্যের অভিযোগও উঠছে। বাম বিরোধীদের অভিযোগ, বাংলায় পঞ্চায়েত দখল করতে গেরুয়া শিবিরের সঙ্গে জোট করে কেন্দ্রে তাদের হারাতে চেয়ে কংগ্রেসের হাত ধরায় বামেদের বিরুদ্ধে আপাতবিরোধী মানসিকতারও অভিযোগ উঠেছে।
তবে বামেদের এমন সিদ্ধান্তে বেজায় খুশি প্রদেশ কংগ্রেস নেতৃত্ব। দলের নবনিযুক্ত রাজ্য সভাপতি সোমেন মিত্র বামেদের এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়ে বলেন, ‘গত বিধানসভা নির্বাচনের পর বামেরাই আমাদের হাত ছেড়ে দিয়েছিল। দেশের সবার্থে এখন যদি ওরা কংগ্রেসের সঙ্গে হাত মিলিয়ে লড়াই করা প্রয়োজন মনে করে তবে স্বাগত’।