জয় প্রত্যাশিত ছিল। হলও তাই।একপেশেভাবেই মোহনবাগান নির্বাচনে জয় পেল টুটু বোস শিবির। প্রাক্তন সভাপতি নতুন পথ শুরু করলেন ক্লাবের সচিব হিসেবে। মোট ২১ টি পদের মধ্যে ১৮টিতে ভোট হয়। সচিব ও আরও ২টি পদের নির্বাচন থেকে আগেই সরে দাঁড়ান প্রাক্তন সচিব অঞ্জন মিত্র, শুভাশিস পাল, শৈলেন ঘোষরা। ফলে সচিব পদে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়লাভ করেন স্বপনসাধন (টুটু) বসু। যে পদগুলিতে ভোট হয়েছে সেখানেই প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের কার্যত উড়িয়ে দেয় টুটু বসু গোষ্ঠী।
সহসচিব পদে ৪০৩৭ ভোট পেয়ে জয়ী হন সৃঞ্জয় বসু। ট্রেজেরার পদে নির্বাচিত হয়েছেন বাগানের প্রাক্তন খেলোয়াড় সত্যজিৎ চট্টোপাধ্যায়। তাঁর প্রাপ্ত ভোট ৩৭৫৩টি। ৩৬৭৫টি ভোট পেয়ে ফের অর্থসচিব পদে আসীন হন দেবাশিস দত্ত। ফুটবল সচিব পদে নির্বাচিত হয়েছেন স্বপন বন্দ্যোপাধ্যায়।
ফলাফলের ট্রেন্ড দেখেই টুটু বসু গোষ্ঠীর সদস্য-সমর্থকরা ঢাকঢোল বাজিয়ে, আবির উড়িয়ে নাচানাচি করতে শুরু করেন। বুধবার ক্লাব তাঁবুতে নব নির্বাচিত মোহনবাগানের কার্যকরী কমিটি প্রথম বৈঠক। প্রাথমিকভাবে নব নির্বাচিত কমিটির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, স্বচ্ছ প্রশাসন, শক্তিশালী দল গঠন ও আইএসএল অংশগ্রহণের লক্ষ্যে কাজ করবে তারা।
ভোট গননা শেষ হওয়ার আগেই টুটু অবশ্য বলে দেন, ‘‘আমাদের প্রথম লক্ষ্য এ বার আই লিগ জেতা। সে জন্য যা করার দরকার করব। কোচ ও ফুটবলারদের সঙ্গে কথা বলব। কোনও সমস্য হবে না।’’ ভোট দিতে এসে সদস্যরা তাঁর কাছে আইএসএল খেলা, নতুন স্পনসর ও ক্লাবের পরিকাঠামো উন্নয়নের জন্যও নানা দাবি করেন। নতুন সচিবকে তাদের আশ্বস্ত করে বলতে শোনা যায়, ‘‘সব হবে এ বার।’’
গতকাল সকাল থেকেই বাগানের নির্বাচনকে ঘিরে সাজসাজ রব ছিল ক্লাব চত্বরে। নির্বাচন পরিচালনার দায়িত্বে ছিলেন আদালত নিযুক্ত তিন প্রাক্তন বিচারপতি অসীম রায়, সুশান্ত চট্টোপাধ্যায় ও দিলীপ শেঠ। সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত ৮৫৫৪ জন ভোটারের মধ্যে ৪৯৫২ জন ভোট দেন। ভোটদাতাদের মধ্যে ছিলেন অরূপ বিশ্বাস, জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক, লক্ষ্মীরতন শুক্লা, সুব্রত মুখোপাধ্যায়, শোভনদেব চট্টোপাধ্যায় সহ রাজ্যের একাধিক হেভিওয়েট মন্ত্রী। ভোট দেন সাংসদ প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায়, বিধায়ক সুজিত বসু, দীপেন্দু বিশ্বাস। এছাড়া ভোট দেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি সোমেন মিত্র, বাম সাংসদ মহম্মদ সেলিম।
প্রসঙ্গত, কয়েক মাস ধরে ক্লাব প্রশাসনের মসনদ দখল করতে দুই বিরোধী গোষ্ঠী যেভাবে প্রচার করেছিল তা অভাবনীয়। সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়, প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়ের মতো তারকাদের দিয়ে প্রচার করানো হয়। ময়দানের একাংশের ধারণা, সচিব পদে বসার পর চমক দেবেন টুটু বসু। জল্পনা চলছে, অঞ্জন মিত্রকে সভাপতির পদে বসিয়ে বন্ধুত্বের নতুন সংজ্ঞাও লিখতে পারেন তিনি।
জয়ের ফলে স্বভাবতই খুশি টুটু বোস সমর্থকরা। তাঁরা বলছেন, ফের যোগ্য কাণ্ডারির হাতেই উঠল মোহনবাগানের পাল।