১৮৭২ সালে ইয়র্ক স্টেশনের একটি সমাধিক্ষেত্রে এক কঙ্কালের মুখ থেকে পাওয়া যায় একটা পাতলা, চ্যাপ্টা সোনার পাত। আর সেই সোনার পাতটি নিয়েই প্রত্নতত্ত্ববিদ ও বিজ্ঞানীরা প্রায় ১৫০ বছর ধরে গবেষণা চালিয়েছেন।
প্রাথমিক ভাবে জানা যায়, কঙ্কালটি তৃতীয় শতকের এক মহিলার কঙ্কালের মুখের মধ্যে ছিল। কিন্তু কেন এরকম পাত ব্যবহার করা হয়েছিল? কোন দেশের মহিলা ইনি? আদৌ মহিলাই তো? এ নিয়ে শুরু হয় গবেষণা।
ইয়র্কশায়ার মিউজিয়াম ছাড়াও বিশ্বের অন্যান্য জায়গায় বিশেষজ্ঞরা বহু গবেষণা করে সম্প্রতি বলেছেন, এটি প্রায় ১৮০০ বছরের পুরনো। বিশ্বজুড়ে এরকম সোনার পাতের ২৩টি নির্দশন রয়েছে বলে জানা গিয়েছে। এই ধরনের সোনার পাত সাধারণত পূর্ব রোমের অভিজাত পরিবারের ব্যক্তিরাই ব্যবহার করতেন।কিন্তু বোঝা যাচ্ছিল না, কেন কী ভাবে এটা ব্যবহার করা হত।
ইয়র্কশায়ার মিউজিয়ামের প্রত্নতত্ত্ববিদ্যা বিভাগের সহকারী কিউরেটর অ্যাডাম পার্কার বলেন, ইয়র্ক স্টেশনে প্রাপ্ত ওই কঙ্কালটি নিয়ে আরও গবেষণা চলছে। বয়স জানা গিয়েছে, সোনার পাতটির। কিন্তু এটা সবে শুরু। কঙ্কালটিকে দেখে গবেষকরা জানিয়েছেন, মৃত্যুর সময় মহিলার বয়স ছিল ১৮-৩০ বছরের মধ্যে।
মহিলা কোন দেশের তা নিশ্চিত করার জন্য শুরু হয়েছে কঙ্কালের বিশেষ ডিএনএ পরীক্ষা। করা হবে স্টেবল আইসোটোপ অ্যানালিসিসও। যদিও রোমের বাসিন্দা যে এই মহিলা তা মোটামুটি নিশ্চিত করেছেন গবেষকরা।
এই ধরনের ‘গোল্ডেন মাউথ প্লেক’ মিলেছে, প্রাচীন রোম, সিরিয়া, তুরস্ক, ক্রিমিয়াতেও। ফ্রান্সেও মিলেছিল এ ধরনের একটি পাত। মহিলাকে সমাধিস্থ করার সময় নকল রুপোর মুদ্রাও দেওয়া হয়েছিল সঙ্গে। ওই মুদ্রার একপিঠে ছিল রোমান সম্রাট সেপ্টিমিয়াস সেভেরাসের ছবি।
অন্য দিকে ছিল ভাগ্যের দেবী ফরচুনাসের ছবি। ২১১ সালে ইয়র্কে মৃত্যু হয় সেভেরাসের। এই তথ্যগুলির মাধ্যমেই সোনার পাতটি সম্পর্কে জানা সম্ভব হয়েছে। ওই মহিলাকে কি সেভেরাসের আমলে বা তার খানিকটা পরে সমাধিস্থ করা হয়েছিল? তা নিয়ে এখনও ধোঁয়াশায় রয়েছেন গবেষকেরা। তবে গবেষণা চলছে এখনও।