পুজোর পর আবার চেনা ছন্দে বীরভূম জেলা তৃণমূল সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল। এবার আর চড়াম চড়াম ঢাক নয়, একেবারে পাঁচন দিয়ে জমি চাষের নির্দেশ দিলেন কেষ্ট।
দলীয় কর্মীদের মিথ্যা মামলায় ফাঁসানোর প্রতিবাদে বীরভূমের দাঁড়কা উচ্চ বিদ্যালয়ের খেলার মাঠে এক প্রতিবাদ সভার আয়োজন করে তৃণমূল। সেখানেই শুরু থেকে বিজেপিকে আক্রমণ করে স্বভাবসিদ্ধ ভঙ্গীতে অনুব্রত বলেন, ‘এবার লোকসভা ভোটে চড়াম চড়াম ঢাক আর বাজবে না, কারণ এখন ঢাকের কাঠি তবলা হয়ে গেছে। সিন্থেটিক চামড়াতে কাঠের মতো আর মোটা লাঠির দরকার হচ্ছে না। এবার তাই লোকসভা ভোটে বুথ থেকে দূরে যে সব উর্বর জমি পড়ে আছে সেখানে পাঁচনের বারি দিয়ে জমি ঠিক করে চাষ করুন। দেখুন ফলন ভাল হবে।’ এদিন অনুব্রতর সভায় ৫০ জন বিজেপি কর্মী তৃণমূলে যোগ দেন।
অনুব্রত বক্তব্য পেশ করার আগেই তাঁর ঘনিষ্ঠ দলের জেলা সহ-সভাপতি অভিজিৎ সিংহ দাবি করেন লোকসভা ভোটে লাভপুর বিধানসভাতে ১ লক্ষ ভোটে লিড দিতে হবে। সেটাই অনুব্রত মনে করিয়ে দিয়ে বলেন, ‘পাঁচন ঠিক থাকলে ভাল চাষ, ভাল চাষ মানে ভাল ফলন’।
সম্প্রতি এই দাঁড়কাতেই তাপস বাগদি নামে এক যুবক গলায় দড়ি দিয়ে আত্মহত্যা করে। এরপরেই মৃত যুবককে নিজেদের কর্মী দাবি করে তৃণমূলের ৫ কর্মীর বিরুদ্ধে খুনের মামলা দায়ের করে বিজেপি। এলাকায় আসেন বিজেপি নেত্রী লকেট চট্টোপাধ্যায়। সেই ঘটনা মনে করিয়ে দিয়ে লকেটের নাম না করেই আক্রমণ শানান অনুব্রত। বলেন, ‘ক’দিন আগে এখানে এক নাচুনি নেচে গেছেন, তাতে কিছু যায় আসে না। আপনারা সঠিক পথে আছেন, সঠিক পথ থাকুন। কী মিথ্যা মামলা দিল তা নিয়ে ভাববেন না, দল আপনাদের পাশে আছে। আমরা খুনের রাজনীতি করি না, করবও না। পুলিশ আছে তদন্ত করবে। যদি আত্মহত্যা না হয় বিচার হবে। চিংড়ি মাছের মতো লাফিয়ে কোনও লাভ হবে না’। তাঁর প্রশ্ন, ‘এতই যদি অভিযোগ ছিল তাহলে ময়নাতদন্তের পর মৃতদেহ দাহ করল কেন’?
বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহের রথযাত্রা নিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে অনুব্রত বলেন, ‘অমিত শাহের রথ ফালতু৷ কোনও গুরুত্বই দিচ্ছি না৷ গোটা জেলাতেই উন্নয়ন দাঁড়িয়ে আছে। উনিও ঘর থেকে বেরিয়েই উন্নয়নকে দেখতে পাবেন। তবে পাঁচন দিয়ে সব ঠিক করে দেব, চিন্তা নেই’।
তৃণমূলের এই প্রতিবাদ সভায় অনুব্রত ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন মৎস্যমন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিংহ ও অন্যান্য তৃণমূল নেতারা। প্রত্যেক বক্তাই আগাগোড়া বিজেপিকে তুলোধোনা করেন।