কাগজে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হওয়ার আগেই এলপিজি দুর্নীতির ছক তৈরি হয়ে গিয়েছিল বলে দাবি তদন্তকারীদের। বিভিন্ন রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থার এলপিজি (লিকুইড পেট্রোলিয়াম গ্যাস) ডিস্ট্রিবিউটরশিপ দেওয়ার জন্য পেট্রোলিয়াম মন্ত্রক থেকে সরকারি বিজ্ঞপ্তি ঘোষণার পনেরো দিন আগেই ধৃত বিজেপি নেতা রণজিৎ মজুমদার বৈঠক করে সব ঠিক করে নিয়েছিলেন। এর জন্য অভিযুক্ত বিজেপি নেতা বিভিন্ন জেলার বিজেপি সভাপতিকে ই-মেল করেন। তাতে গ্রামে গ্রামে ডিস্ট্রিবিউটরশিপ নিতে ইচ্ছুক কর্মী, সমর্থকদের নাম পাঠাতে বলেন। এমনই দাবি করেছেন তদন্তকারী অফিসারেরা। তাঁদের কথায়, ‘লেন, ‘ই-মেলের সূত্র ধরেই তালিকা তৈরি হয়। এবং প্রত্যেকের কাছ থেকে গড়ে চার থেকে সাত লক্ষ টাকা পর্যন্ত আদায় করা হয়। পুরো টাকাটাই নগদে লেনদেন করা হয়েছিল’।
তদন্তকারীদের দাবি, এলপিজি দুর্নীতিতে গ্রেফতার হওয়া বিজেপি নেতা রণজিৎ মজুমদার সংবাদমাধ্যমে বিজ্ঞাপন প্রকাশিত হওয়ার আগেই দলীয় নেতাদের ই-মেল করে এলাকাভিত্তিক এলপিজি ডিস্ট্রিবিউটরশিপ নেওয়ার জন্য আবেদন করতে বলেছিলেন। ধৃত নেতাকে জেরা করে ওই ই-মেল উদ্ধার করা হয়েছে। সেই ই-মেল খতিয়ে দেখার পর পুলিশের দাবি, প্রায় ২৩৪ জনের কাছ থেকে গড়ে তিন থেকে সাত লক্ষ টাকা নেওয়া হয় বলে গোয়েন্দারা জানতে পেরেছেন।
প্রসঙ্গত, বিধাননগরের প্রাক্তন বিজেপি নেতা অশোক সরকার চলতি বছরের অগস্ট মাসের শেষ সপ্তাহে জোড়াসাঁকো থানায় অভিযোগ করেন গ্রামে গ্রামে এলপিজি বা রান্নার গ্যাসের ডিস্ট্রিবিউটরশিপ দেওয়ার নামে কয়েক লক্ষ টাকার দুর্নীতি করেছেন কয়েকজন বিজেপি নেতা। ওই তদন্তে নেমে লালবাজার কলকাতা পুলিশের সেন্ট্রাল ডিভিশনের ৯ জন বাছাই করা অফিসারকে নিয়ে বিশেষ তদন্তকারী দল বা সিট গঠন করে। দফায় দফায় জিজ্ঞাসাবাদের পর সেপ্টেম্বরের দ্বিতীয় সপ্তাহে রণজিৎ মজুমদারকে গ্রেফতার করা হয়। অভিযুক্ত ওই নেতা কলকাতা হাইকোর্টে জামিনের আবেদন করলে তা খারিজ হয়ে যায়।