কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা এখন কেন্দ্রের হাতের পুতুল। তাই বরাবরই সিবিআইকে অন্যায়ভাবে ব্যবহার করে এসেছে বিজেপি। মমতা-সহ বাকি বিরোধীরা বারবারই এই অভিযোগ তুলেছেন। সে অভিযোগের সত্যতা নিয়ে এখন আর কারও মনেই কোনও সংশয় নেই।
এবার সেই অভিযোগকে হাতিয়ার করেই রাজনৈতিক ময়দানে নেমে পড়ল বিরোধীরা। যে ঘটনা আগে কখনও ঘটেনি, গতকাল ঠিক সেটাই ঘটল। সিবিআইয়ের কোন্দলকে ব্যবহার করে সরকার-বিরোধী হাওয়া জোরালো করতে মাঠে নামল বিরোধী পক্ষের কয়েকটি দল।
শুক্রবার, সিবিআই দফতরের সামনে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর বিরুদ্ধে বিক্ষোভে দেখান রাহুল গান্ধী। আর এই গোটা বিক্ষোভে ‘ক্ষয়িষ্ণু’ কংগ্রেসের পাশে থেকে তাদের শক্তিবৃদ্ধি করল দেশের অন্যতম বিজেপি-বিরোধী মুখ মমতার তৃণমূল। একপ্রকার মমতার ভরসাতেই বাড়তি মনোবল নিয়ে মোদীর বিরুদ্ধে আক্রমণের সুর চড়িয়েছিলেন কংগ্রেস সভাপতি।
শুক্রবার, সকালে টুইট বার্তায় সমস্ত রাজনৈতিক দলকে বিজেপির বিরুদ্ধে হওয়া বিক্ষোভে শামিল হওয়ার আহ্বান জানান রাহুল। তখনই মুখ্যমন্ত্রী মমতার নির্দেশে কলকাতা থেকে দিল্লী উড়ে যান দলের রাজ্যসভার সাংসদ নাদিমুল হক। এ ছাড়াও যোগ দেন সিপিআই নেতা ডি রাজা, লোকতান্ত্রিক জনতা দলের নেতা শরদ যাদবরা।
প্রথমে ঠিক হয় সকাল ১১টায় সিবিআই দফতরে পৌঁছবেন সকলে। পরে দয়াল সিং কলেজ থেকে সিজিও কমপ্লেক্স পর্যন্ত মিছিল করার সিদ্ধান্ত হয়। খবর পেয়েই কালঘাম ছুটে যায় দিল্লি পুলিশের। কারণ একদিকে রাহুল গান্ধীর নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করতে হবে। পাশাপাশি বিক্ষোভও সামাল দিতে হবে।
তাই গোটা এলাকাই কড়া নিরাপত্তা বলয়ে মুড়ে ফেলা হয়। দক্ষিণ দিল্লির লোদি রোড-সহ আশপাশের এলাকা কার্যত বন্ধই করে দেওয়া হয়। ফলে প্রায় ৪ কিলোমিটার হেঁটে ঘণ্টাখানেক দেরিতে পৌঁছন রাহুল-সহ বাকিরা।
সিবিআই সদর দফতরের অনেক আগেই আটকে দেওয়া হয় বিক্ষোভকারীদের। রাস্তায় দাঁড়িয়ে উপস্থিত সমর্থকদের উদ্দেশ্যে কংগ্রেস সভাপতি বলেন, ‘চৌকিদার চোর। তদন্তের ভয়ে সিবিআই, নির্বাচন কমিশন এবং ইডি-র মতো প্রতিষ্ঠানগুলিকে ধ্বংস করছেন উনি। কিন্তু, এতে কোনও লাভ হবে না।’
এরপর বিক্ষোভস্থল থেকে গ্রেপ্তার করা হয় রাহুল-সহ বেশ কিছু কংগ্রেস সমর্থককে। বাসে চড়িয়ে তাঁদের স্থানীয় থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে ঘণ্টাখানেক বসিয়ে রাখার পর ছেড়ে দেওয়া হয় তাঁকে। তবে তৃণমূলের সমর্থন পেয়ে রাহুলের এই বিক্ষোভ যে বিজেপি সরকারের মনে ভয় ধরিয়ে দিয়েছে, তা বলাই বাহুল্য।